
বরাকবাণী প্রতিবেদন গুয়াহাটি ১৪ মেঃ অসমের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের ঝড় উঠেছে। রাজ্যের মোট ৩৯৭টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ৩০০টি আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। শতকরা হিসেবে যা দাঁড়ায় ৭৬.২২ শতাংশ। এই অভূতপূর্ব সাফল্যকে ‘মুখ্যমন্ত্রীর জাদু’ বলেই ব্যাখ্যা করছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা।
গুয়াহাটির বাজপেয়ী ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, এবার ব্যালটে ভোটগ্রহণ হওয়ায় ফল প্রকাশে কিছুটা সময় লেগেছে। তবে জেলা প্রশাসনের পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায়, বিজেপি পেয়েছে ২৭২টি আসন, তাদের শরিক অগপ জিতেছে ২৮টি আসনে। বিজেপির মধ্যে ৪টি আসনে রবাহা হাচং যৌথ মঞ্চের প্রার্থীরাও অন্তর্ভুক্ত। কংগ্রেস যেখানে মাত্র ৭২টি আসনে জয়লাভ করেছে, যা মোট আসনের ১৮ শতাংশ। গতবার এই সংখ্যা ছিল ৩৫ শতাংশ।
আঞ্চলিক পঞ্চায়েত স্তরে ২,১৯২টি আসনের মধ্যে বিজেপি ও অগপ মিলে ১,৪৩৬টি আসনে জয়ী হয়েছে। এর মধ্যে বিজেপির দখলে এসেছে ১,২৬৫টি আসন এবং অগপ পেয়েছে ১৭১টি আসন। অর্থাৎ, এনডিএ জোট ৬৬ শতাংশ আসনে জয় লাভ করেছে, যা আগেরবারের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অসমের বেশিরভাগ জেলায় এনডিএ জোট অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে।
বিশেষ করে নিচের জেলাগুলিতে সব আসন দখল করেছে তারা—বিশ্বনাথ, ডিব্রুগড়, যোরহাট, মাজুলী, শোণিতপুর, তিনিচুকিয়া, গোলাঘাট, গুৱাহাটী, কলিয়াবর, ঢকুৱাখনা, চৰাইদেউ, উত্তৰ কামরূপ, ধেমাজি, এছাড়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ জেলায় এনডিএর সাফল্য এমন বজালীতে ৫টির মধ্যে ৪টি বঙাইগাঁওয়ে ১২টির মধ্যে ৮টি, মরিগাঁওয়ে ১২টির মধ্যে ৮টি, শিৱসাগরে ১২টির মধ্যে ১১টি, গোৱালপাড়াতে ১৬টির মধ্যে ১০টি দৰঙে ১২টির মধ্যে ৭টি, হোজাইয়ে ১২টির মধ্যে ৭টি, দক্ষিণ কামরূপে ১২টির মধ্যে ৬টি, নগাঁওয়ে ১৯টির মধ্যে ১১টি, শ্ৰীভূমিতে ১৬টির মধ্যে ১১টি, বরপেটায় ১৯টির মধ্যে ৭টি, ধুবুৰীতে ১২টির মধ্যে ৩টি, হাইলাকান্দিতে ৮টির মধ্যে ৩টি তবে মানকাচার বিধানসভা এলাকার ফল বিজেপির পক্ষে হতাশাজনক। সেখানে একটি আসনও পায়নি বিজেপি মিত্রজোট।
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেন, “সংখ্যালঘু এলাকা বাদ দিলে প্রায় সব এলাকায় বিজেপি ও তার শরিকরা ১০০ শতাংশ আসনে জয় পেয়েছে। এমনকি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতেও কিছু কিছু জয় এসেছে আমাদের ঝুলিতে। আর কংগ্রেস যা পেয়েছে, তা মূলত সংখ্যালঘু ভোটের উপর নির্ভর করেই।
এই ফলাফলকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ শইকিয়া এক ঐতিহাসিক জয় বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, এই জয় দেখিয়ে দিল, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ও শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রতি মানুষের অগাধ আস্থা রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের এই ফলাফল যে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের পূর্বাভাস বহন করে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিজেপি এখন আরও আত্মবিশ্বাসী। আর কংগ্রেসের সামনে আত্মসমালোচনার দীর্ঘ পথ। এক কথায়, মুখ্যমন্ত্রীর ‘জাদুতে’ গেরুয়া আবরণে আচ্ছাদিত হলো গোটা রাজ্য।