পঞ্চায়েত নির্বাচনে এনডিএ-র ‘ঐতিহাসিক’ জয়ের পর আত্মবিশ্বাসে টগবগ বিজেপি শিবির। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তর দাবি, ২০২৬-এ রাজ্যজুড়ে গেরুয়া ঝড় উঠবে!

সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—অসমবাসী আজ উন্নয়নের পক্ষে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের ৩০০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে আছে। এটি রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য হতে চলেছে। ভোটগণনা এখনো চলমান, কিন্তু দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত যেভাবে বিজেপি ও তার মিত্ররা দখল কায়েম করেছে, তাতে এই ‘ঐতিহাসিক’ জয়ের পথে কোনো সন্দেহই রাখছেন না মুখ্যমন্ত্রী।

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বিধানসভা নির্বাচনে পঞ্চায়েতের তুলনায় আরও ভালো ফল হবে। কারণ বিধানসভা ভোটে শুধু গ্রাম নয়, শহরাঞ্চলেও আমাদের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে শহরাঞ্চলে বিজেপির ভিত্তি অনেক শক্ত। তাই, আমরা আশাবাদী—১০৪টি আসন ছুঁয়ে ফেলব।

তবে একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বাস্তবতাকেও মাথায় রাখছেন। তিনি বলেন, সম্ভাবনা আর বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য থাকে। আমরা নিশ্চিতভাবে ৯৫টি আসন জয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে। বর্তমানে ১২৬ আসনবিশিষ্ট অসম বিধানসভায় বিজেপির হাতে রয়েছে ৬৪টি আসন। তাদের দুই গুরুত্বপূর্ণ জোটসঙ্গী—অগপ’র কাছে রয়েছে ৯টি ও ইউপিপিএল-এর কাছে ৭টি আসন।

সব মিলিয়ে এনডিএ-র দখলে রয়েছে ৮০টি আসন। অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের দখলে আছে ২৬টি আসন, এআইইউডিএফ-এর ১৫টি, বিপিএফ-এর ৩টি, সিপিআই(এম)-এর ১টি এবং একজন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন।

২০২৫ সালের শেষভাগে অনুষ্ঠিত হতে চলা বোদোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়নের (BTR) নির্বাচনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেন, আমরা বিটিআর-এ এককভাবে লড়াই করব। তবে সব আসনে নয়, কেবলমাত্র সেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, যেখানে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি আছে। ইউপিপিএল-এর সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।

যদিও পঞ্চায়েত জয়ের নেশায় এখন বিজেপি নেতৃত্ব অনেকটাই উজ্জীবিত, তবে সামনের বিধানসভা ভোটে শাসকদলের সামনে থাকবে নানা চ্যালেঞ্জ—দামবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রশাসনিক ব্যর্থতা প্রভৃতি নিয়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই তৎপর।

তবুও, বিজেপির প্রচারযন্ত্র ও গ্রাউন্ড স্তরের শক্ত সংগঠনের কাছে এই চ্যালেঞ্জগুলো কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে, তা বলবে সময়ই। অসমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল শাসক জোটকে যে অক্সিজেন দিয়েছে, তা স্পষ্ট। এখন দেখার বিষয়, এই প্রবল আত্মবিশ্বাসকে বিজেপি ও এনডিএ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কতটা কাজে লাগাতে পারে।

Related Posts

শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…