
মইনুল হক বরাকবাণী প্রতিনিধি, শ্রীভুমি ৪ মেঃ পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটপর্ব শেষ হলেও শ্রীমন্ত কানিশাইল-বাশাইল জেলা পরিষদ আসনে রাজনৈতিক বিতর্ক এখনো থামেনি। এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী মুস্তাক আহমেদকে ঘিরে ওঠা নানা অভিযোগ, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিশ্বাসঘাতকতার চর্চা ঘোলা করে তুলেছে রাজনৈতিক আবহাওয়া।
শনিবার সন্ধ্যায় কালিগঞ্জ বাজারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে যুব কংগ্রেস নেতা ও বদরপুর যুব কংগ্রেস সভাপতি হুসেন আহমদ পাঠিকর দলের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, মুস্তাক আহমেদের লড়াই কঠিন হয়ে উঠেছিল নিজের দলের তথাকথিত নেতাদের কারণে। কিছু নেতা দলের ছত্রছায়ায় থেকে প্রকাশ্যে না হলেও ভিতরে ভিতরে কংগ্রেস প্রার্থীর বিরোধিতা করেছেন।
হুসেন আহমদ পাঠিকর স্পষ্ট করে বলেন, বিগত লোকসভা ভোটে করিমগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী হাফিজ রশিদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন, জেলা পরিষদ টিকিট প্রত্যাশী সেলিম উদ্দিন, মুন চৌধুরী, রাইজ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ তাজ উদ্দিন নমু, আবুল কালাম তাপাদার সহ বহু জেলা, ব্লক ও মণ্ডল স্তরের নেতা সরাসরি কাজ করেছেন মুস্তাক আহমেদকে হারাতে। তিনি আরও জানান, এমনকি উত্তর করিমগঞ্জ বিধানসভা আসনের ভবিষ্যত টিকিট প্রত্যাশীরাও এই নির্বাচনে মুস্তাক আহমেদের বিপক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

হুসেনের ভাষায়, তথ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে আসতে শুরু করেছে। আমরা বিস্তারিত তালিকা তৈরি করছি। আগামী দিনে এই ‘বিশ্বাসঘাতক’দের নাম সহ কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে। এদের দল থেকে বিদায় করেই আমরা ছাড়ব। কংগ্রেসের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করা যাবে না। মানুষ ভোট দিয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীকে এটাই বাস্তব।
উল্লেখ্য, প্রার্থী মুস্তাক আহমেদকে ঘিরে বিজেপিতে পুনরায় যোগদানের গুঞ্জন ও প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া তার প্রার্থিতায় প্রভাব ফেললেও, যুব কংগ্রেসের দাবি দলের ভেতরের বেঈমানদের জন্য লড়াই আরও কঠিন হয়ে পড়ে। কালিগঞ্জ বাজারের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুব কংগ্রেস সমষ্টির সভাপতি হুসেন আহমদ পাঠিকর, এনএসইউআই উত্তর করিমগঞ্জ ব্লকের সভাপতি লিমন আহমেদ তালুকদার, ব্লক সম্পাদক জাকারিয়া হুসেন, আহমেদ হুসেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সাংবাদিক সম্মেলন থেকে যুব কংগ্রেসের স্পষ্ট বার্তা— দলদ্রোহীদের চিনে রাখা হয়েছে, এবার তাদের বিদায় নিশ্চিত। এই ঘটনা ফের প্রমাণ করল, রাজনীতির লড়াই শুধু বাইরের বিরোধীদের সঙ্গে নয়, ভিতরের গোপন শত্রুদের সাথেও। কংগ্রেসের এই অভ্যন্তরীণ সংঘাত আগামী দিনে দলটির ভিত কতটা টলিয়ে দেয়, এখন সেটাই দেখার।