শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

আর সেই সিন্ডিকেটের মাথায় রয়েছেন বিজেপি মন্ত্রিসভারই এক প্রভাবশালী সদস্য! আশ্রয় শিবির পরিদর্শনের আগে গগৈ উপস্থিত হন জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে। সেখানে তিনি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা কর্ণেন্দু ভট্টাচার্যের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এরপর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দেন।

কিন্তু সেই সৌম্য পরিবেশ থেকে যেন এক লাফে এসে পড়লেন বাস্তবতার নিষ্ঠুর চিত্রনাট্যে। শহরের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে ঘুরে দেখলেন কাঁদতে থাকা শিশু, অসহায় মা, ক্ষুধার্ত বৃদ্ধ কোথাও নেই ওষুধ, নেই পরিষ্কার খাবার জল, নেই রেশন সামগ্রী। অসহায় মানুষের আর্তি শুনে গৌরব গগৈ বলেন, সরকার মানুষের পাশে নেই, আছে সিন্ডিকেটের পাশে। আজকের শাসক দল বরাককে ব্যবহার করছে এক সিন্ডিকেট করিডোর’ হিসেবে।

গৌরব গগৈর অভিযোগ, আরএসএস ও বিজেপির মদতে গড়ে ওঠা চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট আজ বন্দুক হাতে নিয়ে চাঁদা তুলছে, আতঙ্ক তৈরি করছে। তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে বরাকে অশান্তির দাবানল জ্বলবে। তিনি উল্লেখ করেন, কয়লা সিন্ডিকেট, সুপারি সিন্ডিকেট, এমনকি চাল-ডাল রেশন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধেও সাধারণ মানুষ আজ অসহায়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মধ্যে ব্যক্তিগত বিবাদের জেরেই বরাক উপত্যকার উন্নয়ন থমকে গেছে বলে অভিযোগ গগৈর।

তিনি বলেন, বিজেপি আজ ফ্লাইওভার বানাতে পারেনি, ব্যর্থ হয়েছে মিনি সচিবালয় চালু করতে, শিলচরের আকাশপথ থেকে বিদায় নিয়েছে বিমান পরিষেবা। অথচ উন্নয়নের বুলি থেমে নেই। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে গগৈ বলেন, জলমগ্ন শিবিরে শিশুরা যখন না খেয়ে, ওষুধ ছাড়া ধুঁকছে, তখন মন্ত্রীরা ব্যস্ত পুঁজিপতিদের সঙ্গে ছবি তুলতে।

আশ্রয় শিবিরে ত্রাণ বিতরণ করে গগৈ প্রতিশ্রুতি দেন, কংগ্রেস মানুষের পাশেই থাকবে, আর আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসই শাসন ক্ষমতায় ফিরে আসবে। তাঁর দাবি, বিজেপির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর সিন্ডিকেট মডেল মানুষ আর মেনে নেবে না। তিনি জানান, জনগণের দুঃখ-কষ্ট, খাদ্যাভাব, নিরাপত্তাহীনতা এইসব কিছুর নিরসনেই কাজ করবে কংগ্রেস সরকার।

গৌরব গগৈর সঙ্গে এদিন ছিলেন পৃথ্বিরাজ প্রভাকর শাঠে, জেলা কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ পাল, বিধায়ক মিসবাহুল ইসলাম লস্কর, সূর্যকান্ত সরকার, নিশি সরকার, সঞ্জীব রায় সহ এনএসইউআই, যুব কংগ্রেস, সেবা দলের কর্মীরা। শিবিরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিল লড়াই কেবল ক্ষমতার নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।

Related Posts

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…

ত্রাণে বৈষম্যের অভিযোগ, বদরপুরে বিধায়ক আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের তীব্র ক্ষোভ

বরাকবাণী প্রতিবেদন বদরপুর,৬ জুন বদরপুরে ভয়াবহ বন্যার করালগ্রাসে জনজীবন বিপর্যস্ত। ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, রাস্তাঘাট সব কিছুই এখন জলের নিচে। এমন পরিস্থিতিতে যখন দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা জরুরি ছিল, তখনই অভিযোগ উঠেছে,…