
বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৪ মেঃ শিলচরের ঐতিহ্যবাহী দীনানাথ নবকিশোর উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে শনিবার দুপুরে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্যোগে। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসামের মাননীয় মন্ত্রী কৌশিক রাই এবং শিলচরের বিধায়ক মিহির কান্তি সোম।
তাঁদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে গোটা বিদ্যালয় চত্বর জুড়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিদ্যালয়ের পরুয়া স্কাউট দলের ছাত্রীদের মাধ্যমে প্যারেড ও ফুলেল অভ্যর্থনার মধ্য দিয়ে দুই বিশিষ্ট অতিথিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ করানো হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ছাত্রীরা তাঁদের উপস্থিতিতে এক দেশাত্মবোধক আবহ সৃষ্টি করে।

মূল অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়ের শ্যামাচরণ মঞ্চে। মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন মন্ত্রী কৌশিক রাই, বিধায়ক মিহির কান্তি সোম, বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ডা. অভিজিৎ সাহা ও প্রাক্তন অধ্যক্ষা নীলিমা ভট্টাচার্য্য। অতিথিদের উত্তরীয় ও স্মারক প্রদান করে তাঁদের সংবর্ধনা জানানো হয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ডা. অভিজিৎ সাহা তাঁর স্বাগত ভাষণে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, দীনানাথ নবকিশোর উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টি একটি স্বদেশী আদর্শ ও দেশপ্রেমের ধারক প্রতিষ্ঠান। এখানকার ছাত্রীরা পড়াশোনা এবং সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সেইসঙ্গে তিনি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন অতিথিদের সামনে।
মন্ত্রী কৌশিক রাই তাঁর বক্তব্যে বিদ্যালয়ের সঙ্গে তাঁর শৈশবের স্মৃতিচারণা করে বলেন, এই বিদ্যালয় আমাদের অঞ্চলের গর্ব। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই প্রাচীন বিদ্যালয়গুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৭ কোটি টাকা করে অনুদান ঘোষণা করেছে।
আমি নিজে এই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, শ্রেণীকক্ষ, ল্যাব এবং অডিটোরিয়াম নির্মাণে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবো। বিধায়ক মিহির কান্তি সোম বলেন, বিদ্যালয়টির জায়গার অভাব থাকলেও উন্নয়নের পথ থেমে থাকবে না। আমরা যৌথভাবে কাজ করে ছাত্রীদের স্বার্থে নতুন শ্রেণীকক্ষ নির্মাণে সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করবো। একই সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে নতুন ভবনের নকশা তৈরির পরামর্শও দিয়েছি।

অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে একটি স্মারকলিপি মন্ত্রী ও বিধায়কের হাতে তুলে দেন শিক্ষিকা অমৃতা ভট্টাচার্য্য। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সঞ্জীত দেবনাথ, প্রাণেশ চক্রবর্তী, রঞ্জনা ধর, অরুণাভ দে, সোমা পাল, প্লাবনী পাল সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে শিক্ষক রাজেশ কৈরীর ধন্যবাদজ্ঞাপক বক্তব্যের মাধ্যমে। মন্ত্রী কৌশিক রায় ও বিধায়ক মিহির কান্তি সোম তাঁদের বক্তব্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষা-পরিবেশ, ছাত্রীদের প্রতিভা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিষ্ঠার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁরা আশ্বাস দেন, ভবিষ্যতেও শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উন্নয়নমূলক পদক্ষেপে তাঁরা পাশে থাকবেন। অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের দ্বারা পরিবেশিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলকে মুগ্ধ করে।