বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তীব্র প্রতিক্রিয়া, পাকিস্তানের পতাকা দাহ, আমিনুল ইসলামের কুশপুতুল পোড়ানো, সরকারের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি

বরাকবাণী প্রতিনিধিশিলচর,২৬ এপ্রিল: কাশ্মীরের পহেলগাঁহে হিন্দু পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসবাদীদের নৃশংস ও পরিকল্পিত হামলার জেরে গোটা দেশজুড়ে যখন ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে, তখন সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটল শিলচরের রাজপথে। শুক্রবার বজরংদল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে শহরের প্রেমতলা পয়েন্টে আয়োজিত বিশাল প্রতিবাদ সভা রূপ নেয় এক তীব্র জনরোষের বহিঃপ্রকাশে।  

এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ  করেন সংগঠনের বহু শাখার কার্যকর্তা ও সদস্যরা। তারা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং  অসমের  ধিং  সমষ্টির বিধায়ক আমিনুল ইসলামের কুশপুতুল দাহ করেন। পাকিস্তানের  জাতীয় পতাকাও  প্রকাশ্যে  জ্বালিয়ে  প্রতিবাদ জানানো হয়। উপস্থিত নেতা ও কর্মীদের কণ্ঠে  ধ্বনিত  হয়  সন্ত্রাসবাদ নিপাত যাক হিন্দুদের উপর আঘাত সহ্য করা হবে না সরকার জবাব দিক ইত্যাদি স্লোগান। এই প্রতিবাদ সভায় পহেলগাঁহে নিহত পর্যটকদের  প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি  নিবেদন করা হয়।

পাশাপাশি, বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা রাষ্ট্র ও প্রশাসনের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন, যদি সরকার এই সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি না দেয়, তবে আমাদের আর হাত গুটিয়ে বসে থাকার সময় নেই। প্রয়োজনে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

নেতারা অভিযোগ করেন, পহেলগাঁহে যে পদ্ধতিতে পর্যটকদের চিহ্নিত করে হত্যা করা  হয়েছে,  তা  স্পষ্টতই একটি  সুনির্দিষ্ট  ধর্মীয়  ঘৃণার  ফসল। শুধুমাত্র  হিন্দু  বলেই  তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হামলা জাতীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ শান্তির উপর এক ভয়ঙ্কর আঘাত।  এই প্রতিবাদ সভায় ধিং সমষ্টির বিধায় আমিনুল ইসলামের নাম সরাসরি তুলে আনা হয়।

বজরং দল ও বিশ্ব  হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশে  মৌলবাদী মানসিকতা এবং সন্ত্রাসবাদের মদতদাতাদের চিহ্নিত  করা  অত্যন্ত জরুরি। কিছু রাজনৈতিক নেতাও এই মৌলবাদী শক্তির হাতের পুতুল হয়ে গেছেন। বিধায়কের কুশপুতুল দাহ করে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয় যে, হিন্দু সমাজ এই ধরনের রাজনীতিকে আর বরদাস্ত করবে না।

প্রতিবাদ  চলাকালীন শিলচর শহরের প্রেমতলা এলাকায় প্রশাসনের তরফে ছিল ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা। পুলিশের নজরদারিতে এবং পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েনের ফলে পুরো কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় । তবুও  গোটা  এলাকা ছিল উত্তেজনাপূর্ণ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ উৎসুক দৃষ্টিতে পুরো ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। সংগঠনের নেতারা দাবি করেন, এই হামলার পেছনে যেসব  জঙ্গি গোষ্ঠী  দায়ী, তাদেরকে  শুধু  গ্রেপ্তার  করলেই চলবে না, প্রয়োজনে সীমান্তে ঢুকে তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করতে হবে।

এই বার্তা শুধু সরকারের প্রতি নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রতিও যদি হিন্দুদের উপর আঘাত  আসে, তবে তা প্রতিহত করা হবে, যে কোনও মূল্যে। তারা  আরও  জানান, এই ঘটনা শুধু হিন্দুদের  নয়, ভারতের উপর হামলা। সরকার যদি  কঠোর  পদক্ষেপ  নিতে  ব্যর্থ  হয়, তাহলে জনগণের ক্ষোভ সহিংস রূপ নিতে বাধ্য হবে।

Related Posts

শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…