পাথারকান্দিতে শি*শুহ*ত্যা, নি*খোঁ*জের সাতদিন পর উ*দ্ধা*র নিথর দেহ, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিল করিমগঞ্জ জেলা আমছু

পুলিশের উদাসীনতা এবং তদন্তে অগ্রগতির অভাবে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা ও সামাজিক সংগঠনগুলো। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আছিমগঞ্জ কামারবন্দ গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিনের একমাত্র পুত্র, পাথারকান্দি সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুলের ছাত্র ছোহেল হুছাইন (১০) গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে করিমগঞ্জ জেলা আমছুর সহযোগিতায় পাথারকান্দি থানায় একটি মিসিং রিপোর্ট দায়ের করা হয়।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, নিখোঁজের সাতদিন পর, ১৬ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে এক বৃদ্ধা প্রতিবেশীর চোখে পড়ে পাশের একটি পরিত্যক্ত নালায় পুঁতে রাখা একটি দেহ। পানির নিচে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় ছিলো শিশুটির নিথর দেহ—হাত ও পা ছিলো বাঁধা। ঘটনার খবর পেয়ে পাথারকান্দি থানার ওসি, করিমগঞ্জ জেলার এসপি এবং জেলা আমছুর প্রতিনিধিগণ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং দেহটি উদ্ধার করে শনাক্ত করেন ছোহেল হুছাইন হিসেবে।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে করিমগঞ্জ জেলা আমছুর সভাপতি মাওলানা বাহারুল ইসলাম জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে শিশুটি নিখোঁজ ছিল, অথচ পুলিশ প্রশাসন তৎপরতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিশুটির দেহ উদ্ধারে প্রশাসনের ভূমিকা ছিল হতাশাজনক। এখনো পর্যন্ত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি, যা আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য) করিমগঞ্জ জেলা আমছুর পক্ষ থেকে জেলার প্রতিটি সার্কেল অফিসে ডিজিপির উদ্দেশ্যে ৪৮ ঘণ্টার চরম পত্র প্রদান করা হয়। কেন্দ্রীয় আমছুর সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ছাদিক আখতারের নেতৃত্বে এই কর্মসূচি পালিত হয়। চরম পত্র প্রদানকারী কমিটিসমূহ ও নেতৃত্ব, পাথারকান্দি সার্কেল, করিমগঞ্জ জেলা আমছু রামকৃষ্ণ নগর সার্কেল, আনিপুর আঞ্চলিক কমিটি (নেতৃত্ব দেন সহ সভাপতি হাবিব আহমেদ ও সদস্য দিলোয়ার আহমেদ) নিলামবাজার সার্কেল-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটি (নেতৃত্ব দেন সাহিদ আহমেদ ও অন্যান্যরা)করিমগঞ্জ সদর সার্কেল ফকিরাবাজার আঞ্চলিক কমিটি (নেতৃত্ব দেন ইয়াহিয়া চৌধুরী, জাহান চৌধুরী, জাহিরুল আলম চৌধুরী) এই কর্মসূচিতে করিমগঞ্জ জেলা আমছুর সাধারণ সম্পাদক সালমান আহমেদ সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা না হয়, তাহলে আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান, শিশু হত্যার বিচার যেন কোনোভাবেই বিলম্বিত না হয়। স্থানীয়দের অভিমত, পাথারকান্দির মত জনবহুল অঞ্চলে এমন এক নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তীকালে প্রশাসনিক ব্যর্থতা জনসাধারণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে।

শিশুরা আজ আর নিরাপদ নয়—এমন বাস্তবতায় স্তম্ভিত পুরো এলাকা। শিশু ছোহেল হুছাইনের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে এলাকাবাসী, সমাজকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠন দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Related Posts

শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…