
বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর ২৩ মেঃ কাছাড় জেলা আবারও প্রমাণ করলো, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশ কতটা তৎপর ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ড্রাগ পাচারকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হওয়া এই জেলায় একের পর এক সফল অভিযান চালিয়ে মাদক সিন্ডিকেটের কোমর ভাঙতে সচেষ্ট কাছাড় জেলা পুলিশ। সর্বশেষ অভিযানটি আরও একবার দেখিয়ে দিল যে, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকদূর যাওয়া যায় না।
গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাছাড় পুলিশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযান চালায় শিলচরের রামনগর আইএসবিটি (ISBT) এলাকায়। অভিযান চলাকালীন, পুলিশ এক মাদক পাচারকারীকে আটক করে, যার কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৬২২ গ্রাম হেরোইন। এই পরিমাণ হেরোইনের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় তিন কোটি টাকারও বেশি বলে অনুমান করছে পুলিশ প্রশাসন।
মাদক কারবারিরা আজ নানা আধুনিক ও চতুর কৌশল অবলম্বন করে মাদক পাচারের চেষ্টা করছে। কখনো গাড়ির গোপন চেম্বারে, কখনো ব্যক্তিগত ব্যাগ বা দেহের সঙ্গে লুকিয়ে পাচারের ফন্দি করছে তারা। কিন্তু এসব কৌশল ভেদ করে বারবার সফল হচ্ছে কাছাড় পুলিশের তৎপর দল। জেলার বিভিন্ন থানা ও পুলিশ চৌকিগুলি সমন্বিতভাবে অভিযান চালিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মাদকসহ পাচারকারীকে ধরছে।
স্থানীয়দের মতে, এই ধরণের অভিযান একদিকে যেমন মাদক কারবারিদের মধ্যে ভীতি তৈরি করছে, তেমনি অপরদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থা আরও দৃঢ় করছে। জেলার যুব সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে এই মাদক ব্যবসা। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া থেকে শুরু করে বেকার যুবকেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত। তাই পুলিশ প্রশাসনের এমন তৎপরতা সমাজের পক্ষেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এ প্রসঙ্গে এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েই আমরা কাজ করছি। যতই শক্তিশালী হোক মাদক সিন্ডিকেট, তাদের রেহাই নেই। আইন তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেবে। এই অভিযান নিঃসন্দেহে কাছাড় জেলা পুলিশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—এই ধরনের পাচারের পেছনে কে বা কারা আছে, কীভাবে এত পরিমাণ হেরোইন জেলায় প্রবেশ করছে, এবং আরও কতজন এই চক্রে জড়িত? পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তির জবানবন্দি এবং অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে গোটা চক্রকে ধরার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।