
শিবন নাথ বরাকবাণী প্রতিনিধি হাফলং, ২৩ মে: হাফলং-শিলচর ৫৪নং জাতীয় সড়কের হাফলং থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত অংশটি বর্তমানে এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিগত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে সড়কটির এ অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে পড়েছে, যা দেখে মনে হয় যেন রাস্তার উপরেই পুকুর গড়ে উঠেছে।
এইসব গর্তের কারণে প্রতিদিন যান চলাচলে ভয়াবহ বিঘ্ন ঘটছে, তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। যানজট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রতিদিনই শত শত পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকছে রাস্তার দু’ধারে। ট্রাক থেকে শুরু করে ছোট গাড়ি পর্যন্ত সবকিছু যেন স্থবির হয়ে পড়েছে এই একটুকরো সড়কে। যাত্রীরা বাধ্য হচ্ছেন গাড়ির ভেতরে অনাহারে-অর্ধাহারে অবস্থান করতে। দিনের পর দিন এমন দুর্ভোগ সহ্য করে চলেছেন তাঁরা।
বিশেষ একটি সূত্রে জানা গেছে, বদরপুর এলাকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধসে পড়ার ফলে হাফলং-শিলচর সড়কের উপর দিয়ে বিকল্প পথে চলাচল শুরু করেছে অধিকাংশ যানবাহন। যার ফলে এই দুর্বল, জীর্ণ সড়কে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন ভোর থেকেই সড়কটি দিয়ে শত শত গাড়ি চলাচল শুরু হয়, ফলে রাস্তার কঙ্কালসার চেহারা আরও ভীতিকর হয়ে ওঠে। যাত্রীরা বলছেন,
এ দুর্ভোগ আজকের নয় যুগ যুগ ধরে তাঁরা এই একই দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করছেন। বর্ষা এলেই যেন দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ এখনো গৃহীত হয়নি। একের পর এক প্রকল্পের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের ঘুম এখনো ভাঙেনি। জনগণের করের টাকায় যাঁদের বেতন চলে, তাঁরা সাধারণ মানুষের এই কষ্টে যেন সম্পূর্ণ উদাসীন। সামান্য সংস্কার কাজ করেও তা আবার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বা মানসম্পন্ন নির্মাণ কাজের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। প্রশ্ন উঠেছে কতদিন এভাবে চলবে? বর্ষা আসলেই কি হাফলং-শিলচর সড়ককে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হতে হবে? যাত্রীরা কেন প্রতিবার প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার শিকার হবেন?
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারকে জোরালোভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে—অবিলম্বে এই সড়কের জরুরি সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করা হোক। নাহলে এই জাতীয় সড়ক যে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখনই ব্যবস্থা না নিলে, আগামী দিনে এর ভয়াবহতা আরও বহুগুণে বাড়বে। সময় এসেছে প্রশাসনকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলার কারণ এটি শুধুই একটি রাস্তার সমস্যা নয়, এটি এখন মানুষের জীবন-মরণ ও নিরাপত্তার প্রশ্ন।