হাইলাকান্দি জেলা পরিষদ নির্বাচন: বিজেপির ঝড়, নির্দল ও কংগ্রেসের হালকা হাওয়া

পাশাপাশি, একটি আসনে নির্দল প্রার্থী এবং আরেকটিতে কংগ্রেস প্রার্থী নাটকীয়ভাবে বিজয়ী হয়েছেন। সবচেয়ে আগে ফলাফল ঘোষণা হয় কাটলীছড়া-বাঘছড়া জেলা পরিষদ আসনে। এই আসনে বিজেপি প্রার্থী পম্পা দাস বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তিনি ২০,৫৮৫ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা দাসকে ১৩,৫২৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।

প্রিয়াঙ্কা দাসের প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৭,০৫৮টি। পম্পা দাসের এই জয়কে অনেকেই বিজেপির সংগঠিত প্রচার ও মহিলা ভোটারদের আস্থা অর্জনের ফল বলে মনে করছেন। দ্বিতীয় ফলাফল আসে বরুনচরা-ধলচরা আসন থেকে। এখানে বিজেপির বিপ্লব অবস্তি ১৫,৩৫০ ভোট পেয়ে কংগ্রেসের সুচিত্রা বিশ্বাসকে ৬,৯৬৪ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দেন। সুচিত্রা বিশ্বাসের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ছিল ৮,৩৮৬। বিজেপি শিবিরে এই ফলাফল উদ্দীপনার সঞ্চার করেছে।

তৃতীয় আসনে, অর্থাৎ উমেদনগর-রাজেশ্বরপুর জেলা পরিষদ আসনে বিজেপির অঞ্জন নাথ মজুমদার ১০,৭০৮ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নির্দল প্রার্থী বেবি নুনিয়া, যিনি পেয়েছেন ৭,২৪৪ ভোট। ভোটের ব্যবধান ছিল ৩,৪৬৪। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিজেপি-র প্রার্থী বেছে নেওয়ার কৌশল এবং মাঠ পর্যায়ে সক্রিয়তা এই আসনে বিজয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

অপরদিকে, জামিরা-সাহাবাদ জেলা পরিষদ আসনে নির্দল প্রার্থী ফাতিমা বেগম চৌধুরী রীতিমতো চমক সৃষ্টি করেন। তিনি ২৩,৪৯২ ভোট পেয়ে অসম গণ পরিষদ (অগপ)-এর প্রার্থী রহিমা বেগম লস্করকে বিপুল ১৪,৬৯৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। রহিমা বেগম পেয়েছেন মাত্র ৮,৭৯৩ ভোট। ফাতিমা বেগমের এই জয় নির্দল প্রার্থীদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সবশেষে, কালিনগর-পাইকান জেলা পরিষদ আসনে কংগ্রেস প্রার্থী নাসিমা ফেরদৌসী লস্কর তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী বেবি চন্দকে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়লাভ করেন। যদিও সুনির্দিষ্ট ব্যবধান জানা যায়নি, তবুও এই জয় কংগ্রেস শিবিরে স্বস্তি এনে দিয়েছে। নাসিমা ফেরদৌসীর শান্ত স্বভাব, জনসংযোগ এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাই তাকে জয়ের মুখ দেখিয়েছে বলে বিশ্লেষণ করছেন অনেকে।

হাইলাকান্দির জেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপির ভালো অবস্থান স্পষ্ট হলেও, নির্দল ও কংগ্রেস প্রার্থীদের জয় শাসকদলের জন্য একপ্রকার সতর্কবার্তা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই বলছেন, স্থানীয় সমস্যাগুলি, প্রার্থীর ব্যক্তি পরিচয় ও মাঠপর্যায়ে যোগাযোগই এই নির্বাচনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে।

পরবর্তী ফলাফলগুলির দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল অপেক্ষা করছে আরও চমকপ্রদ পরিস্থিতির। হাইলাকান্দির রাজনীতিতে এই ফলাফল কতটা প্রভাব ফেলবে, তা দেখার বিষয়। এই প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত হাইলাকান্দি জেলায় ভোট গণনা চলছে বলে জানা গিয়েছে

Related Posts

রাজ্যে ২০১৯-২০২৪ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ১৯২ কোটি

অ্যাডভান্টেজ অসম দ্বিতীয় সংস্করণের সাফল্য নিয়ে আশাবাদী সরকার বরাকবাণী প্রতিবেদন, গুয়াহাটি, ৩১ জানুয়ারি: অসমে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ২২.৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ১৯২…

মন্ত্রী রণোজ পেগুর বিভাগে ঠিকাদারির সিণ্ডিকেট!

সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করে অসম টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকা, প্রধানমন্ত্রী আদি আদর্শ গ্রাম যোজনায় চলছে ‘হরির লুঠ’ বরাকবাণী প্রতিবেদন, গুয়াহাটি, ২৮ জানুয়ারি: রাজ্যের স্কুল পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম সরবরাহ নিয়ে বড় ধরণের কেলেঙ্কারি…