ভোট শেষ, এখন হিসেবের পালা! গ্রামীণ জনপদে চলছে ‘কে জিতবে, কে হারবে’র জল্পনা-কল্পনা

কোনো পক্ষ জয়ের দম্ভে বুক ফুলিয়ে বলছে আমরা জিতছি, আবার কেউ বা সম্ভাব্য পরাজয় আঁচ করে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। জেলা পরিষদ আসনে দিদারখোষ নগদী গ্রামের কংগ্রেস প্রার্থী সাহিন আহমেদ লস্করের জয় নিশ্চিত বলে দাবি করেছেন তার সমর্থকরা। তারা আশাবাদী, ভোটের মাঠে সাহিনের প্রতিপক্ষরা তার ধারেকাছেও নেই।

অন্যদিকে, দিদারখোষ গ্রাম পঞ্চায়েতের আঞ্চলিক পঞ্চায়েত (এপি) পদে বিজেপির মলয় কুমার দাশের সমর্থকরা শতভাগ নিশ্চিত যে মলয়বাবু জিতছেন। তবে রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে এসেছে, তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন তৃণমূলের আব্দুল্লা লস্কর। অনেকে আবার বলছেন, কংগ্রেস প্রার্থী কমর উদ্দিন আহমেদ থাকবেন তৃতীয় স্থানে। এই হিসেব অবশ্য মলয় দাশের সমর্থকদের নিজের তৈরি চিত্র।

ভারীকান্দি জিপিতে নির্দল প্রার্থী সিমি বেগম চৌধুরীর সমর্থকরা একধাপ এগিয়ে। তারা বলছেন, এই আসনে সিমির জয় একেবারে নিশ্চিত। যদিও কংগ্রেস প্রার্থী রাজনা বেগম মজুমদার দ্বিতীয় স্থানে থাকবেন বলে তারা ধরে নিচ্ছেন। এখানেও উত্তেজনা কম নয়।

স্বাধীন বাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের এপি পদে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জুনু বাবুর ভাতিজার স্ত্রীর জয় এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এলাকাবাসী এবং সচেতন মহলের বিশ্লেষণে তার জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। রাজনৈতিক ব্যাকিং না থাকলেও তার প্রতি মানুষের সমর্থন চোখে পড়ার মতো। কচুদরম জিপিতে কংগ্রেসের প্রতীক হাত এবং স্বতন্ত্র দলীয় প্রতীক হাতী দুই পক্ষই জয়ের স্বপ্ন দেখছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। কংগ্রেস প্রার্থী কাদির আহমেদ লস্কর দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় এবং তিনি বর্তমানে পাপ্তন এপি। অন্যদিকে, নজরুল হক লস্করের রাজনীতিতে নতুন আগমন হলেও তার প্রচার-প্রচারণা নজর কেড়েছে। তবে অভিজ্ঞতার দিক থেকে কাদিরের পাল্লা একটু ভারী বলেই মত অনেকের।

গ্রামের মোড়, চায়ের দোকান, স্থানীয় হাট-বাজারে এখন একটাই আলোচনার বিষয়— কে জিতছে? বিশ্লেষণের নামে অনেকে নিজের দলের প্রার্থীকে এগিয়ে রাখছেন, আবার কেউ নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করছেন। তবে প্রকৃত ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে ভোট গণনা পর্যন্ত।

স্থানীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে যদি কংগ্রেস প্রার্থীরা ব্যাপক হারে পরাজিত হন, তাহলে ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে সোনাই কেন্দ্র কংগ্রেসের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে বর্তমান বিধায়ক করিম উদ্দিন বড়ভুইয়া যদিও মাঠে প্রচারে ছিলেন না, তবুও এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের সুবাদে তিনি মানুষের মাঝে আলাদা অবস্থান তৈরি করেছেন। এই উন্নয়নের প্রতিফলনই দেখা যাবে ভোটের ফলাফলে।

ভোট শেষ হলেও জয়ের হিসেব শেষ হয়নি। চায়ের কাপে ঝড় উঠবেই। তবে আসল ঝড় উঠবে গণনার দিন। সেদিনই বোঝা যাবে, কে জিতছে আর কে হারছে—এখন যা চলছে, তা নিছকই ভোট-পরবর্তী উত্তাপ আর জনমানসের রাজনৈতিক উত্তেজনা।

Related Posts

শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…