দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারি ও শ্রমিক অধিকার হরণের বিরুদ্ধে ১৭ দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক

সঞ্জেন্দু নাথ,বিষ্ণু দত্ত পুরকায়স্থ, মান্না দত্তকে নিয়ে গঠিত সভাপতি মণ্ডলী সভার কাজ পরিচালনা করেন। সভার শুরুতে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানায় নিহত পর্যটক এবং গতকাল পথ দূর্ঘটনায় মৃত চেরাগী অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের নেতা চিনি লাল কৈরীর প্রয়ানে এক মিনিট শোক পালন করা হয়।

শুরুতে অভিবর্তনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন জে সি টি ইউ নেতা তথা অভিবর্তনের আহ্বায়ক তরুন দে। তিনি সরকারী, বেসরকারী ক্ষেত্রে শ্রমিকদের উপর নামিয়ে আনা আক্রমণের ব্যাখ্যা করে বলেন সংগঠিত ক্ষেত্রে কাজের ঘণ্টা বাড়ছে। ধর্মঘট করা যাবে না। ইউনিয়ন করা যাবে না। অসংগঠিত ক্ষেত্রের অবস্থা আরো করুন। প্রকল্প কর্মীদের মজুরি বাড়ছে না। চাকরীর স্থায়ীকরণ হচ্ছে না।

ভারতীয় শ্রম সম্মেলন ডাকা হচ্ছে না,বেকারী দেশকে গ্রাস করেছে। এই প্রজন্মের যুবকদের কাছে কাজ নেই। কাজের দরজা বন্ধ করেছে সরকার। আমাদের রাজ্যে সাম্প্রতিক নিয়োগগুলিতে বরাক উপত্যকার যুবক, যুবতিদের ইচ্ছাকৃত বঞ্চনা করা হচ্ছে। বেঙ্ক, বীমা, রেল, ডাক, বিদ্যুৎ জলের দরে ধনিকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় দেশের ট্রেড ইউনিয়ন গুলি ২০শে মে দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছে। কৃষকরা এই ধর্মঘটকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছেন।

খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেন সি আই টি ইউ করিমগঞ্জ জেলা সম্পাদক তরুন গুহ। তিনি বলেন জনজীবনের সব অংশের মানুষের দাবি স্থান পেয়েছে ১৭ দফা দাবিতে। তিনি সমাজের সব অংশের মানুষকে এগিয়ে এসে জেলায় ২০শে মে সাধারণ ধর্মঘটকে সফল করার আহ্বান জানান।

অন‍্যদিকে  শ্রমিক নেতা অরুনাংশু ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় সরকারের দেশের বৃহৎ ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ধারাবাহিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার সমালোচনা করে বলেন বিগত করোনাকালে রাস্তায় অসংগঠিত শ্রমিকের মৃত্যু হাহাকার দেশ ভুলবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের বৃহৎ মালিকদের স্বার্থ রক্ষা এবং নিচু তলার মানুষের কথা চিন্তা না করার ফসল এই জীবনহানি। তিনি দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বার-বারন্তে শঙ্কা বোধ করেন।

তিনি এই রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। কৃষক নেতা কালিপদ নাথ জিলায় সেচের অভাব, দেশে এম এস পি আইন প্রবর্তন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি অসংগঠিত শ্রেণী, নির্মাণ শ্রমিক, মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মীদের দাবিগুলির কথা তুলে ধরেন।

অভিবর্তনে বক্তব্য রাখেন গ্রামীণ বেঙ্ক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা মান্না দত্ত, বীমা কর্মচারী নেতা অরূপ চক্রবর্তী, ডাক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা সুজিত চক্রবর্তী। তারা বেঙ্ক, বীমা,ডাক ইত্যাদি বিভাগ গুলিতে ধর্মঘটকে সফল করার প্রতিশ্রুতি দেন। মান্না দত্ত বলেন কেন্দ্রীয় সরকারের আনা শ্রমকোড ভয়ঙ্কর এই কথাটা শ্রমিকের মধ্যে পৌঁছাতে হবে।

শিক্ষক নেতা ব্যোমকেশ ভট্টাচার্য এই ধর্মঘটের ব্যাপক প্রচার সংগঠিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। সমাপ্তি ভাষনে সভাপতি মণ্ডলীর পক্ষে অধ্যাপক সঞ্জেন্দু নাথ মানুষের ঐক্যকে ভাঙ্গার জন্য সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিপদের কথা উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান। অভিবর্তনে আগামী ২০ শে মে জেলায় সাধারণ ধর্মঘটকে সফল করার প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়।

Related Posts

শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…