
বরাকবাণী প্রতিনিধি উধারবন্দ ১৩ এপ্রিল: বিজেপির বিরুদ্ধে ভয় ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনল উদারবন ব্লক কংগ্রেস। রবিবার পানগ্রামস্থিত কংগ্রেস কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে দলীয় কর্মকর্তারা ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন, বিজেপি সরকার কেন্দ্র রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে যেকোন ভাবে প্রার্থীদের বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অযোগ্যদেরও নির্বাচনে প্রার্থী করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদন্ড না মেনে এক ধরনের আধিপত্য বিস্তার করে তাদের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস এটা মেনে নেবে না। সর্বশক্তিতে তা মোকাবিলা করবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সন্দীপন নন্দী, প্রদীপ তাঁতি, আবুল হোসেন বড়ভূঁইয়া, জগদানন্দ দেব, ললিত গোয়ালা প্রমুখ প্রশ্ন তোলেন বিজেপির জেলা পরিষদ প্রার্থী রোহিত সিংহের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে। বলা হয় রোহিত সিংহ উধারবন্দের পুরনো বাসিন্দা নন। তিনি বাইরে থেকে এসে এখানে আধিপত্য বিস্তার করেছেন। কিন্তু তার পড়াশোনা, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে রহস্য রয়েছে। যদিও শনিবার তার প্রার্থিত্বে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে কিন্তু কংগ্রেসের দাবি হলো যাতে ফের সেটি স্ক্রুটিনি করা হয়।
উল্লেখ্য, খবর অনুসারে রোহিত সংস্কৃত টোল থেকে মেট্রিক এবং ওপেন স্কুল থেকে হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করেছেন কিংবা সার্টিফিকেট জোগাড় করেছেন। রোহিত সিংহ সম্পর্কে কংগ্রেসের জেলা পরিষদ প্রার্থী ফাতেমা আল মামন সাংবাদিকদের কাছে জানান যে রোহিতের শিক্ষাজীবন নিয়ে তিনি সন্দিহান। তিনি নিজে উদারবন ডিএনএ সেকেন্ডারিতে পড়াশুনা করেছেন, উধারবন্দের মাটিতেই বড় হওয়া, কিন্তু রোহিত কিভাবে কি করেছেন, তা খোলসা হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন। ফাতেমা জোরদার ভাবে দাবি করেন তিনি নির্বাচনে জিতবেনই এবং রোহিতের বিরুদ্ধে বিজেপি দলের বিক্ষুব্ধরা তার সঙ্গে আছেন।
এদিকে পানগ্রামে আঞ্চলিক পঞ্চায়েতের প্রার্থী হিসেবে সুকৃতি সতনামীর বিরুদ্ধে বিজেপি অভিযোগ করেছে যে তিনি একজন আশা কর্মী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন না। সে হিসেবে তাকে সরিয়ে বিজেপি প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত বলে দাবি করা হয় বিজেপির তরফে। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা প্রশ্ন তোলেন অতীতে কুম্ভা জিপিতে খোদ বিধায়ক মিহিরকান্তি সোমের প্রশ্রয়ে বিজেপির টিকিটে মেম্বার পদে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আরেক আশা কর্মী সুমিতা চন্দ। তখন বিধায়ক সহ বিজেপির সবাই বলেছিলেন আশা কর্মী কোন সরকারি চাকরি নয় সুতরাং সুমিতার নির্বাচনের লড়তে কোন বাধা নেই।
তাহলে এখন কেন সুকৃতির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করা হবে। এই জোরদার প্রশ্ন তোলেন তারা । তারা আরো জানান সুকৃতি এবার নিয়ম মেনে আশা কর্মী পদে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেটাও হতে দেননি বিধায়ক মিহিরকান্তি সহ বিজেপির স্থানীয় নেতারা। যাতে সুকৃতি ইস্তফা না দিয়ে আশা কর্মী পদেই বহাল থাকেন, সে ব্যবস্থা করা হয়। কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, বিজেপির যদি এতই অনুকূল হাওয়া, তাহলে কেন এ ধরনের প্রতারণা এবং পিছনে লাগার খেলা চালানো হচ্ছে। কংগ্রেস নেতারা জানান, এসব অনিয়ম নিয়ে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে তারা দাবি করেন বিজেপি শত চেষ্টা করলেও কংগ্রেস আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে উধারবন্দে ভালো ফলাফলই করবে। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইকবাল হোসেন, আব্দুল হেকিম চৌধুরী সহ অনেকে।