কেউটকোনা জিপির ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বন্যায় সর্বহারাদের ভাগ্যে আজও জোটেনি ক্ষতিপূরণ।

বরাকবাণী প্রতিবেদন,শ্রীভুমি,২৯ জানুয়ারিঃ রাজ্যের বন্যাক্রান্ত মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করল সরকারি আমলাতন্ত্ররা। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব সর্মার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকার অন্যান্য এলাকার বানভাসিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হলেও রহস্য জনক ভাবে দক্ষিণ শ্রীভুমি কেন্দ্রের নিলামবাজার সার্কেলের আওতাদিন কেউটকোনা জিপির ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদেরকে সরকারি ক্ষতিপূরণ ব্যাংক একাউন্টে জমা করেনি সরকারী আমলারা। এনিয়ে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নিলামবাজার লালপুলস্তিত জনতার আওয়াজ এনজিওর সভাপতি মানই মিয়া,শ্রীভুমী করিমগঞ্জ জেলা ইয়ং ব্রিগেট সেবা দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হোসেন আহমেদস্তানীও বন্যাগ্রস্ত প্রণয় সোম, বিশ্বাজিত নমশুদ্র, সুশান্ত বিশ্বাস, মিনাদ আহমেদ,আরিদ উদ্দিন প্রমুখ। তারা বলেন ২০২৪ সালের জুন ও জুলাই মাসে কয়েক দফার বন্যায় কেউটকোনা জিপির বিভিন্ন গ্রামের ৮-১০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কয়েক জন মানুষের প্রাণহানিও ঘটে। হাজার হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। ধান ও মৎস্য চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অসংখ্য বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ মাসাধিক কাল শিবিরে আশ্রিত ছিলেন। যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এর মধ্যে বেশিরভাগই তাদের বাড়ি মেরামত করতে পারেননি।গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন জেলার জেলা কমিশনারদের নিয়ে গুয়াহাটিতে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বৈঠক শেষে সরকারের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ১৫ আগস্ট অর্থাৎ, স্বাধীনতা দিবসের আগে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের কাজ শুরু হবে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১২ আগস্ট থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু হবে।

কিন্তু বাস্তবতা বলতে কিছুই নেই । পরবর্তীতে সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়ায়, আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। তাও হয়নি। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মন্ত্রীরা বিভিন্ন জেলা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিক ডেকে বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই বন্যাক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাস চলে গেলেও এক পয়সাও ক্ষতিপূরণ পায়নি ক্ষতিগ্রস্থরা।

এখন জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষেরা বন্যার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। কিন্তু রহস্য জনক ভাবে নিলামবাজার সার্কেলের আওতাদিন আলমখানী গ্রামের শাত ও আট নম্বর ওয়ার্ডের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা একটি টাকাও পাননি। বিশেষ করে পাঞ্জাব ব্যাংকের গ্রাহকেরা সম্পুর্ণ রুপে বঞ্চিত।

এদিকে, বন্যায় যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের অনেকেই ভেঙে পড়া ঘরে কিংবা অন্যত্র স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দুর্ভোগে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। চাষীরা আশায় ছিলেন, সরকারের তরফ থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পেলে তাঁদের কিছুটা সুরাহা হবে। কিন্তু তাঁদেরও আশাভঙ্গ হয়েছে।বন্যাক্রান্ত মানুষের অভিযোগ, আগে সরকার বন্যার পরই ক্ষতিপূরণ প্রদান করতো। কিন্তু এবারই প্রথম বন্যা চলে যাওয়ার দশ মাস কেটে গেলেও ক্ষতিপূরণ জোটেনি। শুধু প্রতিশ্রুতিই পাচ্ছেন তাঁরা।তারা আরও বলেন বন্যার কবলে পড়া বহু মানুষ নিজের এলাকায় ত্রাণ শিবিরে ঠাঁই না পেয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। বন্যার সময় দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল পরিবারে কাজ ও খাদ্যের তীব্র হাহাকার দেখা দেয়। ত্রাণের জন্য বহু লড়াই করতে হয়েছে বানভাসিদের। বন্যা চলে যাওয়ার পর সব হারানো মানুষ ভেবেছিলেন সরকারী আমলারা তাঁদের পাশে দাঁড়াবে। উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের তালিকা শিক্ষকদের দিয়ে তৈরিও করে প্রশাসন। কিন্তু অনেকদিন চলে গেলেও আজ পর্যন্ত তাঁদের ক্ষতিপূরণ জোটেনি। বন্যাক্রান্তদের শীঘ্রই ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী,মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল ও জেলা শাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

  • Related Posts

    মিয়ানমারের ৪.৭ মাত্রার রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মণিপুর, নাগাল্যান্ড সহ আসাম, এখনো হতাহতের খবর নেই, আতঙ্কে বহু মানুষ

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। সকাল ৬টা ১০ মিনিটের সময় বহু মানুষ এখনো ঘুমের রাজ্যে। সেই সময় আচমকা কেঁপে ওঠে মাটি। প্রথমে…

    শিলচর ডিসি অফিসে বাবু সিণ্ডিকেটের চাঁই সৌমিত্র নাথ ধর্ষণ অভিযোগে গ্রেফতার

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ শিলচর শহর কেঁপে উঠেছে জেলা কমিশনারের কার্যালয়কেন্দ্রিক এক নারীর প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতনের ঘটনায়। সরকারি দফতরের ভেতরেই যখন নারী সহকর্মী নিরাপদ নন, তখন সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার…