মুড়ি মেশিনে গাঁজা! অভিনব কৌশলেও রেহাই মেলেনি, পুলিশের হাতে আটক কোটি টাকা মূল্যের গাঁজা সহ লড়ি চালক

বরাকবাণী প্রতিবেদন  চুরাইবাড়ি ২০এপ্রিল: নতুন নতুন কৌশল নিতেও শেষরক্ষা হল না—মুড়ি তৈরির মেশিনে গাঁজা লুকিয়ে পাচারের চেষ্টায় পুলিশের জালে ধরা পড়লো এক মিনি লড়ি চালক, সঙ্গে বিপুল পরিমাণ গাঁজা। নেশা কারবারিরা যতই অভিনব পন্থা অবলম্বন করুক, চুরাইবাড়ি পুলিশের কড়া নজরদারির সামনে তা বারবার ভেস্তে যাচ্ছে। সম্প্রতি এমনই একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে মুড়ি তৈরির মেশিনের ভেতরে লুকিয়ে পাচার করা হচ্ছিল বিপুল পরিমাণ গাঁজা।

তবে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে গেল পাচারচক্রের এই চালাকি। শুক্রবার রাত প্রায় দশটা নাগাদ তেলিয়ামুড়া থেকে অসমের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া TR01AQ-1516 নম্বরের একটি মিনি লড়ি চুরাইবাড়ি নাকা পয়েন্টে এসে পৌঁছায়। সেই সময়ে ওসি খোকন সাহার নেতৃত্বে চেকিং চালাচ্ছিল পুলিশ। সন্দেহ হওয়ায় লড়িটিকে থামিয়ে তল্লাশি শুরু হয়। গাড়ির ভিতরে একটি মুড়ি তৈরির মেশিন দেখে পুলিশ সদস্যদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে।

মেশিনটির গঠন ছিল এতটাই নিখুঁতভাবে সাজানো যে, প্রথম দেখায় কিছুই বোঝা যায়নি। কিন্তু খোলার পর বেরিয়ে আসে আসল চিত্র—মেশিনের ভিতরের দুটি চেম্বারে লুকিয়ে রাখা ছিল গাঁজার একের পর এক প্যাকেট। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয় মোট ৫৯টি প্যাকেটে থাকা ৩৪৫ কেজি শুকনো গাঁজা। যার আনুমানিক কালোবাজারি মূল্য ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে লড়ির চালক মনিতা মোহন জমাতিয়া (৪৫), পিতা কৃষ্ণ বাঁশি জমাতিয়া, তেলিয়ামুড়ার খামারবাড়ি এলাকার বাসিন্দা, তাকে আটক করে পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, গাঁজাগুলি খোয়াই শহরের পদ্মবিল এলাকা থেকে বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অসম হয়ে বিহারে পাচারের উদ্দেশ্যে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জে ডার্লং জানিয়েছেন, ধৃত চালকের বিরুদ্ধে NDPS আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং গোটা চক্রের শিকড় খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল—নেশার সাম্রাজ্য গড়ে তোলা মাফিয়ারা যতই উচ্চপ্রযুক্তির আশ্রয় নিক না কেন, তাদের থামাতে পুলিশও ততটাই প্রস্তুত। মুনাফার লোভে গুটি কয়েক চক্র সমগ্র যুবসমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। নেশা মাফিয়ারা পুলিশের কঠোর ধরপাকড়ে কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও, তারা আবারও অভিনব ও প্রযুক্তিনির্ভর কৌশল অবলম্বন করে ফিরে আসছে পুরনো কারবারে।

তবে পুলিশের নজরদারিতেও থেমে নেই সেই প্রচেষ্টা রুখে দেওয়ার কার্যক্রম। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, যতই কৌশল পাল্টাক পাচারকারীরা, ততই সতর্ক, সজাগ ও সাহসী হয়ে উঠছে আইন রক্ষাকারী বাহিনী। চুরাইবাড়ি নাকা পয়েন্ট যেন এখন নেশা মাফিয়াদের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে!

Related Posts

শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…