২০০ বছরের প্রাচীন লাল বাবার মন্দির কুশিয়ারার গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে!

অভিযোগ, বহুবার মৌখিক ও লিখিতভাবে মন্দির রক্ষার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে বিধায়কের কাছে, কিন্তু তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। এমনকি এলাকার নদীভাঙন পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যাওয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, যদি এটি কোনো মসজিদ বা মাদ্রাসা হতো, তবে কি এত অবহেলা করা হতো? এই প্রশ্ন এখন প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে।

একের পর এক বন্যা ও কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে গত কয়েক বছরে অনেক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। এবার টার্গেট ঐতিহাসিক লাল বাবার মন্দির। অবস্থা এতটাই সংকটজনক যে, যেকোনো সময় মন্দিরটি সম্পূর্ণ ধসে পড়তে পারে। আরও দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, মন্দিরের একেবারে পাশেই এক স্থানীয় ভিন্নধর্মী ব্যক্তি ব্যক্তিগত পুকুর খনন করেছেন, যার ফলে নদীভাঙনের গতি আরও বেড়ে গেছে। এতে মন্দিরের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং যে কোনো সময় বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।

এলাকাবাসী একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসন এবং জেলাশাসকের দপ্তরে অভিযোগ জানালেও কার্যত কোনো সাড়া মেলেনি। মনে হচ্ছে যেন প্রশাসনের কাছে এই মন্দিরের অস্তিত্বের কোনো মূল্য নেই। সরকারের নিরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সমাজকর্মী ও সচেতন নাগরিকরা। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সমাজকর্মী মুন্নী ছেত্রী। তাঁর নেতৃত্বে ও আহ্বানে একাধিক শাসকদল সমর্থিত কর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সেই তালিকায় ছিলেন বনোজ চক্রবর্তী, দীলিপ দাস, মৃন্ময় দেব, ঝন্টু চন্দ, তাপস মালাকার, মুন্না দাস, অরুণ দাস, রঞ্জু দাস, দীপালি চক্রবর্তী, মন্দিরের সেবায়িত মাইজি সহ আরও অনেকে। তাঁদের সকলের একটাই আবেদন অবিলম্বে মন্দির রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুক রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুন।

তাঁরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, মন্দির রক্ষায় অবিলম্বে জরুরি ব্যবস্থা না নিলে এই ঐতিহ্য ধ্বংস হয়ে যাবে। শুধু একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, এটি শ্রীভূমির সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অমূল্য নিদর্শন। এখন প্রশ্ন উঠছে একটি প্রাচীন ঐতিহ্য যখন বিলীন হওয়ার পথে, তখন কেন নীরব থাকছে প্রশাসন? কেন উপেক্ষা করছেন এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি? এই প্রশ্নের উত্তর চাইছে গোটা ভাঙ্গা ও শ্রীভূমির মানুষ। 

  • Related Posts

    শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

    ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

    বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…