
বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর ২রা এপ্ৰিল: কাছাড় জেলার শিলচর শহরের ইটখলা রাধারমণ সরণিতে পুরনো জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে বিকল্প পথে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রাবাস নির্মাণের উদ্যোগ ঘিরে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। এলাকাবাসী এই ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এই নির্মাণের পেছনে রয়েছেন বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ঠিকাদার আবুব মজুমদার, যার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে কালোবাজারি ও অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছিল। অতীতে নানা অপরাধমূলক কার্যকলাপের কারণে তিনি হাজতবাসও করেছেন। এবারও তিনি প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এলাকাবাসীর স্বার্থের পরিপন্থী একটি নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাধারমণ সরণির ওই নির্দিষ্ট এলাকার জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবুব মজুমদারের নেতৃত্বে এটি বন্ধ করে দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই জল নিষ্কাশন পথ বন্ধ হলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে এবং এলাকার পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রাবাস নির্মাণের নাম করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে এই কাজ করছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধুমাত্র স্থানীয়দের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হবে না, বরং এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াবে যে প্রভাবশালীরা প্রশাসনের নিয়ম-নীতিকে উপেক্ষা করে নিজেদের স্বার্থে অবৈধ কাজ করতেই পারেন। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, এই অবৈধ নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ করা না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন। ইতিমধ্যেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তবে প্রশাসন এখনও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, তারা এই অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন এবং যেকোনো মূল্যে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করবেন।

ইটখলা রাধারমণ সরণিতে পুরনো নালার প্রবাহ পরিবর্তন করে জমি বেদখল ও একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রাবাস নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, কিছুদিন আগে ইটখলা ঈদগাহ এলাকার পুরনো নালার পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিতর্কিত ঠিকাদার আবুব মজুমদারকে, যিনি সরকারি গাইডলাইন অমান্য করে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নালা নির্মাণের শুরু থেকেই রাস্তার এপার ও ওপারে থাকা জল নিষ্কাশন ব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়ে স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ না করে ঠিকাদার নিজের মত করে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, রাধারমণ সরণিতে নালা নির্মাণের কাজ চলার সময় পুরনো জল নিষ্কাশনের পথ পরিবর্তন করে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রাবাস নির্মাণ করা যায়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এবং তাঁরা সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এলাকাবাসী প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানিয়েছেন যে, অবিলম্বে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। নাগরিকরা স্থানীয় প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করলেও এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
ইটখলা রাধারমণ সরণিতে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শতাব্দী প্রাচীন নালার পথ পরিবর্তন করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী এই ব্যাপারে জেলাশাসক, লোক নির্মাণ বিভাগের কার্যবাহী বাস্তুকার, জেলা বিজেপি সভাপতি, কাছাড় জেলা বিজেপি সভাপতি এবং বিধায়ক মিহির কান্তি সোমের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নালিশ জানান। অভিযোগ অনুযায়ী, লোক নির্মাণ বিভাগের ঠিকাদার আবুব মজুমদার ঐতিহ্যবাহী নালার পথ বন্ধ করে অন্যপাশে নতুন নালা নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এলাকাবাসীর দাবি, নালার গতিপথ পরিবর্তন করে তিনি সরকারি খাস জমি বেদখল করার চেষ্টা করছেন এবং সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন। এই ঘটনার ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জানার পর বিধায়ক মিহির কান্তি সোম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তিনি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা চালান। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সমস্যাটির কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। এলাকাবাসী দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।