শিক্ষা বিভাগের কড়া সিদ্ধান্ত, সেবার অনুমোদনহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা ভুয়ো, সরকারি স্কুলে প্রবেশ নিষিদ্ধ

বরাকবাণী প্রতিবেদন  শিলচর ২রা এপ্ৰিল: আনাচে কানাচে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা আন অথোরাইজড বেসরকারি স্কুলের দাপদাপানিতে কচিকাঁচা ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যত প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাড়িয়ে আছে। সরকার প্রদত্ত গাইড লাইনকে উপেক্ষা করে একশ্রেণির দালালরা অর্থের পিছনে ছুটতে গিয়ে যেখানে খুশি স্কুল খুলছে। সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে এদেরকে প্রশ্রয় যুগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা বিভাগেরই একটি দুষ্ট চক্র । ইদানীংকালে শ্রীভূমি জেলা, হাইলাকান্দি জেলা সহ কাছাড় জেলার এদিন ওদিক চোখ ফিরলেই দেখা যায় আন অথোরাইজড বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছড়াছড়ি।

সমগ্র বরাকজুড়ে গড়ে ওঠা এসব  আন অথোরাইজড স্কুলের খপ্পরে পরে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন কচিকাঁচা ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকরা। রাজ্যের শিক্ষা বিভাগের তরফে জারী করা এক নির্দেশনামায় বলা হয়েছে আন অথোরাইজড স্কুল থেকে আসা কোনো ছাত্র ছাত্রীদেরকে সরকারি স্কুলে ভর্তি করা চলবেনা। শিক্ষা বিভাগ এসব ছাত্র ছাত্রীদেরকে ফেইক অর্থ্যাৎ ভুয়ো ছাত্র ছাত্রী হিসেবে গন্য করছে। স্বভাবতই শিক্ষা বিভাগের জারী করা এমন নির্দেশে দুশ্চিন্তার ছাপ পরেছে অভিভাবক মহলে।  বর্তমান সময়ে বরাকজুড়ে আন অথোরাইজড বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা অগনিত। যে যেখানে পারছে সেখানেই কয়েকটি ডেস্ক বেঞ্চ নিয়েই স্কুল খুলে টাকা কামাতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। রহস্যজনকভাবে এসব ফেক স্কুলের বিরুদ্ধে  কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেনা স্থানীয় শিক্ষা বিভাগ। আসলে সবকিছুই চলছে ম্যানেজফর্মূলায় অর্থ্যাৎ উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া ঠিক থাকলেই কেল্লাফতে। ইদানীংকালে বরাকবাণী দৈনিক সংবাদ মাধ্যম  বেসরকারি স্কুল নিয়ে একের পর এক ধারাবাহিক সংবাদ পরিবেশন করায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আন অথোরাইজড বেসরকারি স্কুল কতৃপক্ষকে। মার্চ মাসের এই সময়ে চলছে নতুন ছাত্র ছাত্রী ভর্তির মরশুম।

জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অঞ্চলে গজিয়ে ওঠা অবৈধ অর্থাৎ যেসব বেসরকারি স্কুলগুলোকে শিক্ষা বিভাগ বৈধতার স্বীকৃতি দেয়নি এধরণের স্কুলে ছাত্র ছাত্রী  ভর্তি  করতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকগন। শিক্ষা বিভাগের জারী করা নির্দেশনামা অনুযায়ী অবৈধ স্কুলে পড়া ছাত্র ছাত্রীরা সরকারের খাতায় একজন ভুয়া ছাত্র ছাত্রী । সুতরাং এধরনের ছাত্র ছাত্রীকে কোনও ভাবেই সরকারী স্কুকে ভর্তি করা যাবেনা। মূলত বেসরকারি স্কুলগুলোর জন্য শিক্ষা বিভাগ কিছু নীতি নির্দেশিকা জারী করে রেখেছে। যেসব বেসরকারি স্কুল কতৃপক্ষ সরকার প্রদত্ত দেওয়া গাইড লাইন ফুলফিল করতে পারছে তাদেরকেই বৈধতার সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বৈধ স্কুলের ছাত্র ছাত্রী যারা পড়াশুনা করে তাদের প্রত্যেকের “পেন” নম্বর রয়েছে অর্থাৎ পারমানেন্ট একাডেমি নাম্বার।

অবৈধ স্কুলের পড়াশুনা করা ছাত্র ছাত্রীদেরকে এই নাম্বার দিতে না পারায় চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীদেরকে। শিক্ষা বিভাগের জারী করা এই নির্দেশনামা সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। যারফলে প্রত্যেক মা বাবারা আসপাশে থাকা যেকোনো স্কুলে বাচ্চাদেরকে ভর্তি করিয়ে দিচ্ছেন। ছোট্ট ক্লাস থেকে পড়াশুনা করে তাদের বাচ্চারা যখন ক্লাস এইট কিংবা নাইনে পড়ার জন্য অন্য স্কুলে ভর্তি হতে যাবে মূলত তখনই এই সমস্যা দেখা দেবে। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে অভিভাবকদেরকে। কারন অবৈধ এসব স্কুল থেকে পড়ে আসা ছাত্র ছাত্রীদেরকে কোনও ভাবেই সরকার স্বীকৃত স্কুলে ভর্তি করানো সম্ভব হচ্ছেনা । পেন নাম্বার না থাকার দরূন এসব বাচ্চাদের নতুন করে অন্য স্কুলে ভর্তি করানোটা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।  এক কথায় বেসরকারি স্কুলের খপ্পরে পরে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে অভিভাবকদের।  তারা তাদের  বাচ্চাদেরকে না পারছেন নতুন স্কুলে ভর্তি করতে না পারছেন অবৈধ বেসরকারি স্কুলে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে। সবমিলিয়ে রাজ্যজুড়ে অবৈধ স্কুলের ছড়াছড়িতে ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাড়িয়ে রয়েছে। বরাকবাণী দৈনিক পত্রিকা সমাজের স্বার্থে আগামীতে এধরণের ভুয়ো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংবাদ পরিবেশন করতে বদ্বপরিকর থাকবে।

  • Related Posts

    মিয়ানমারের ৪.৭ মাত্রার রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মণিপুর, নাগাল্যান্ড সহ আসাম, এখনো হতাহতের খবর নেই, আতঙ্কে বহু মানুষ

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। সকাল ৬টা ১০ মিনিটের সময় বহু মানুষ এখনো ঘুমের রাজ্যে। সেই সময় আচমকা কেঁপে ওঠে মাটি। প্রথমে…

    শিলচর ডিসি অফিসে বাবু সিণ্ডিকেটের চাঁই সৌমিত্র নাথ ধর্ষণ অভিযোগে গ্রেফতার

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ শিলচর শহর কেঁপে উঠেছে জেলা কমিশনারের কার্যালয়কেন্দ্রিক এক নারীর প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতনের ঘটনায়। সরকারি দফতরের ভেতরেই যখন নারী সহকর্মী নিরাপদ নন, তখন সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার…