
বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩১ মার্চ: পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে যখন সারা দেশ শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বার্তা ছড়িয়ে দিতে ব্যস্ত, তখন শিলচর ইটখোলা ঈদগাহ ময়দানে ঘটে গেল এক নিন্দনীয় ও লজ্জাজনক ঘটনা। সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা একদল সাংবাদিকের ওপর চরম অসভ্য আচরণ করেন আবুব মজুমদার নামে এক ব্যক্তি, যার ঔদ্ধত্য ও বর্বর আচরণ পুরো অঞ্চলের সম্প্রীতির পরিবেশকে কলুষিত করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঈদের নামাজ শেষ হতেই যখন সাংবাদিকরা সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন, তখন আচমকা আবুব মজুমদার তাদের দিকে তেড়ে যান, কটূক্তি করতে থাকেন এবং প্রকাশ্যে তাদের হেনস্থা করেন। এমনকি, কিছু সাংবাদিককে শারীরিকভাবে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার হলো, এই ব্যক্তি গত বছরও এক প্রবীণ সাংবাদিককে অপমান করেছিলেন, তখনও তীব্র সমালোচনার ঝড় তোলে। এবারের ঘটনাটি আরও হতাশাজনক, কারণ ইটখোলা ঈদগাহ ময়দান শান্তি, সৌহার্দ্য এবং সম্প্রিতির বার্তা ছড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখানে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হন। সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা সমাজে শান্তি ও ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেওয়া, আর সেই প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এবারও তিনি ঈদের মতো পবিত্র দিনে সাংবাদিকদের অপদস্থ করে নিজের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
এই ঘটনায় সচেতন নাগরিকদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, ইটখোলা ঈদগাহ শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং এটি একটি সম্প্রীতির প্রতীক, যেখানে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলে উপস্থিত হন। অথচ, সেই পবিত্র ময়দানেই সাংবাদিকদের অপমান করে আবুব মজুমদার প্রমাণ করলেন যে, তিনি সমাজবিরোধী মানসিকতার একজন বিকৃত চেতনার ব্যক্তি, যার কোনো সভ্য সমাজে স্থান নেই। এমন হীন আচরণ সম্প্রীতির শত্রুদের কাজ, যারা ঈদের দিনে সৌহার্দ্যের বদলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়।
বরাকবাণী নিউজ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এটি শুধু সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ নয়, বরং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর এক নগ্ন আঘাত। সংবাদ সংগ্রহের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার এই দুঃসাহস কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
ইটখোলা ঈদগাহ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের প্রতি জোরালো দাবি জানানো হচ্ছে, তারা যেন বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করেন এবং এই উগ্র, বিশৃঙ্খলাকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না ঘটে সেই দিকে সুতীক্ষ্ণ নজর রাখার অনুরোধ করছেন সুশীল সমাজ। সাংবাদিকদের প্রতি এই ধরনের বর্বর আচরণ সমাজের চরম নৈতিক অবক্ষয়ের পরিচায়ক এবং এটি কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না। সাংবাদিকদের প্রতি সম্মান ও সৌজন্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে বিভাজন সৃষ্টি না করে ঐক্য ও শান্তির বার্তা বহন করাই আমাদের সকলের দায়িত্ব।