বীরবল বাজার থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত যানজটে নাজেহাল জনজীবন

বরাকবাণী প্রতিবেদনঃশিলচরঃ২২ জানুয়ারিঃ শিলচর মেডিক্যাল রোডে প্রতিদিনের যানজট শহরবাসীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। প্রতিদিনের যানজটের কারণে এই রাস্তাটি ব্যবহারকারী শহরবাসীর কাছে এক অভিশাপে পরিণত হয়েছে। প্রিন্ট ও বৈদ্যুতিন প্রচারমাধ্যমে বারবার এই সমস্যাটি তুলে ধরা হলেও, পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সমস্যার সমাধানে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এই সড়কের যানজটের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে পার্কিং ব্যবস্থা না থাকা। মেডিক্যাল রোডে গ্রেসওয়েল, সাউথসিটি, ভ্যালি নাইটেঙ্গলসহ একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, এসব বেসরকারি হাসপাতালের অধিকাংশেরই নিজস্ব পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। ফলে অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত গাড়ি, সবকিছু সড়কের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এতে সড়কের প্রস্থ সংকুচিত হয়ে যায় এবং যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।

প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে এই সমস্যাটি দিন দিন আরও প্রকট হয়ে উঠছে। যেখানে হাসপাতাল নির্মাণের সময় পার্কিংয়ের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার কথা, সেখানে এ বিষয়টি নজরদারির অভাবে উপেক্ষিত থেকে গেছে।

বীরবল বাজার থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত সড়কের যানজট এখন নিত্যদিনের দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় এই যানজটের কারণে অপচয় হচ্ছে, যা এলাকার মানুষদের জীবনে দারুণ প্রভাব ফেলছে। অফিসগামী কর্মী, রোগী পরিবহন, এমনকি শিক্ষার্থীদের জন্যও এই যানজট অসহনীয় হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে, যেন সড়কের উপর তাদের অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা না হয়। তবে এসব অভিযোগের কোনো সমাধান হয়নি। উল্টো সমস্যার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে রাস্তার পাশে অবৈধভাবে বালু-পাথর বিক্রি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু যানজটই সৃষ্টি করছে না, বরং পথচারীদের চলাচলের ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করছে।

প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দিনের পর দিন এমন দুর্ভোগ চলতে থাকায় নাগরিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে তারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু নিট ফল শূন্য। প্রতিদিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে সমস্যার মুখে পড়ছেন তারা। তবে এখন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। শীঘ্রই এই সড়ককে যানজটমুক্ত করে তুলতে পুলিশ প্রশাসন যদি কোনও পদক্ষেপ না নেয় তা হলে তারা ভয়াবহ আন্দোলন গড়ে তুলবেন-হুংকার ভুক্তভোগী জনতার

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রশাসন কবে দায়িত্ব নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করবে? অবৈধ বালু-পাথর ব্যবসা বন্ধ করা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়ম মেনে গাড়ি রাখার নির্দেশনা দেওয়া—এই দুটি পদক্ষেপই পরিস্থিতি উন্নত করতে যথেষ্ট। কিন্তু ততক্ষণে ভুক্তভোগী মানুষদের ধৈর্যের সীমা কতটা থাকবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

  • Related Posts

    মিয়ানমারের ৪.৭ মাত্রার রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মণিপুর, নাগাল্যান্ড সহ আসাম, এখনো হতাহতের খবর নেই, আতঙ্কে বহু মানুষ

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। সকাল ৬টা ১০ মিনিটের সময় বহু মানুষ এখনো ঘুমের রাজ্যে। সেই সময় আচমকা কেঁপে ওঠে মাটি। প্রথমে…

    শিলচর ডিসি অফিসে বাবু সিণ্ডিকেটের চাঁই সৌমিত্র নাথ ধর্ষণ অভিযোগে গ্রেফতার

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ শিলচর শহর কেঁপে উঠেছে জেলা কমিশনারের কার্যালয়কেন্দ্রিক এক নারীর প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতনের ঘটনায়। সরকারি দফতরের ভেতরেই যখন নারী সহকর্মী নিরাপদ নন, তখন সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার…