
✍️ মাওলানা মহবুবুর রহমান, ইনচার্জ, আইএইচআরএসিএস ইন্ডিয়া। : অতি সম্প্রতি শ্রীভুমি (করিমগঞ্জ) ফকির বাজার স্থিত এমকে গান্ধী কলেজে এক লোমহর্ষক ধিকৃত চরম নিন্দনীয় ঘৃণ্য কর্ম সংঘটিত হয়েছে। যা পুরো শৈক্ষিক ও সুশিল সমাজ কে নাড়িয়ে দিয়েছে। একজন শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার মন্দিরে এহেন ঘৃণ্য অপরাধ মানবতার কলঙ্ক, কোনো সভ্য সমাজ মেনে নিতে অপারগ। অথচ এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন আজ অবধি নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে!! !
তথ্য মতে, গত চার (৪) জানুয়ারি কলেজ অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন চৌধুরী দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে (ঠুনকো বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে) পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কমন রুমে ডেকে নিয়ে অনৈতিকভাবে অসংখ্য বেত্রাঘাত করার পাশাপাশি মারমুখী হামলা করেছেন। বিতর্কিত বেপরোয়া এই অধ্যক্ষ ছাত্রিটিকে কিল, চড় সহ একাধিক লাথিও মেরেছেন। এমনকি লাথি মেরে মেয়েটিকে অজ্ঞান করে মাটিতে ফেলে দেন । এমনকি অধ্যক্ষ মহোদয় একজন শিক্ষক হয়ে জ্ঞানপ্রজ্ঞার মাথা খেয়ে জাতপাত তুলে গালাগালও করেছেন। ছিঃ ছিঃ! ধিক্কার!
আরোও আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, অধ্যক্ষ মহোদয় ছাত্রীর গার্জিয়ান কে হুমকিও দিয়েছেন যে, থানায় মামলা করলে সংশ্লিষ্ট ছাত্রী ও তার অপর বোনকেও কলেজ থেকে বহিস্কার করে দেবেন!! ভাবসাব এমন যেন, কলেজ তাঁর বাবার মিরাশ! তাই বিশ্লেষকদের অভিমত , প্রশাসন তথা রাজনৈতিক প্রচ্ছন্ন মদতেই অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন চৌধুরী এহেন বেপরোয়া লাগামহীন আচরণ করেছেন!!! আজ ঘটনার ১১ দিন অতিক্রান্ত হলেও পুলিশি তৎপরতা শূণ্য! রাজনৈতিক চাপে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ!
ভাবতে অবাক লাগে ,জ্ঞানের মন্দিরেও যদি একজন ছাত্রী এরকম অমানবিক প্রহার, নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির শিকার হয়, তা তো এ সমাজের কলঙ্ক সূচিত করছে না? একজন কলেজ অধ্যক্ষের এ সব অনৈতিক, অমানবিক কর্মকাণ্ড আদৌ মানায়??? প্রশ্ন ওঠছে, বিতর্কিত অধ্যক্ষ ইকবাল কার মদতে এহেন দুঃসাহসিক কাজ করলেন? তিনি ক্ষমতার অপব্যাবহার করে জাতপাতের বিরুদ্ধে এভাবে কথা বলার ও অপমান করারই বা ছাড়পত্র কোথায় পেলেন? এদিকে ভুক্তভোগীর তরফে গত ৯/০১/২০২৫ তারিখে এজাহার দায়ের করা হলেও আজ ঘটনার এগারো দিন পরও এখনো অবধি প্রশাসন কর্তৃক কোনো তদন্ত বা গ্রেফতারির খবর নেই!। তাও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার শাসনামলে!!! সত্যিই চরম বিড়ম্বনার ও লজ্জাজনক বিষয়!
যেখানে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের কে বিশেষত মেয়েদের কে সাইকেল , বানীকান্ত কাকতি অ্যাওয়ার্ড অধীনে স্কুটি ইত্যাদি বিভিন্ন উৎসাহ ব্যঞ্জক পুরস্কার দিয়ে অভিরোচন করা হচ্ছে, সেখানে একজন কলেজ অধ্যক্ষ হয়ে ইকবাল কোন দুঃসাহসে একজন ছাত্রী কে জাত তুলে গালি দিয়ে অপমান করতে পারেন! কীভাবে কমজাত,নীচ বলতে পারেন!? তিনি কেমন করেই বা বললেন,’ কিরান সম্প্রদায়ের মানুষের এমকে গান্ধী কলেজে পড়ার অধিকার নেই ‘? প্রশ্ন ওঠছে, কলেজ কি তাঁর বাবার মিরাশ? উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই বহু অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
সর্বোপরি, এহেন পরিস্থিতিতে লো এন্ড অর্ডার রক্ষায় ও “আইন সবার জন্য সমান ” এর সঠিক বাস্তবায়নের স্বার্থে অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন চৌধুরীরকে প্রশাসন কর্তৃক আশু গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তি বিধান করা নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এটাই ভারতীয় ন্যায় ব্যবস্থা তথা সাংবিধানিক নিয়ম। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার আশু হস্তক্ষেপ পূর্বক বিতর্কিত নিচ মানসিকতাসম্পন্ন অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে সঠিক সদর্থক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি। জয় আই অসম।