
প্রশাসনের কাছে তদন্ত চেয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি পরিবারের।
বরাকবাণী প্রতিনিধি, কাটলিছড়া, ১৫ জানুয়ারি: সাতজনের পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী বিধান দত্ত পেশায় একজন গাড়ি চালক। শারিরীক পরিশ্রমের মাধ্যমে চার সন্তান, স্ত্রী ও এক বৃদ্ধ মাকে নিয়ে সুখের সংসারে দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করে সংসার চালাতো বিধান। সুখের সংসারে আচমকা কালো ছায়া নেমে আসবে তাহা স্বপ্নেও ভাবেননি বিধানের পরিবার। বৃদ্ধ বয়সে ছেলের পচাগলা মৃতদেহ ড্রেন থেকে উদ্ধার হবে কল্পনাও করতে পারেননি বিধানের মা।
জানা গেছে, গত তিন জানুয়ারি থেকে গাড়িচালক বিধান নিরুদ্দেশ ছিল। পরিবারের সদস্যরা চারিদিকে খবর নিয়ে যখন সন্ধান পাওয়া যায়নি তখন উপায় না পেয়ে বিষয়টি কাটলিছড়া থানায় অবগত করা হয়। এদিকে, গাড়ির মালিক রহিম উদ্দিন চৌধুরী বরাকবাণী প্রতিনিধিকে জানান এএস০১এসসি-১৫৯০ নম্বরের অশোক লেল্যান্ডের উনার ট্রাক গৌহাটি লালমাটি এলাকার একটি ট্রান্সপোর্ট থেকে ভুসিমাল সামগ্রী নিয়ে মনিপুর রাজ্যের চুরাচান্দপুর পৌঁছে দেয়ার কথা। কিন্তু সময়মতে নির্ধারিত স্থানে না পৌঁছায় সন্দেহ বাঁধে গাড়ি মালিক রহিম উদ্দিনের। উনি এসংক্রান্ত বিষয়ে কাটলিছড়া থানায় একটি এজাহারও দাখিল করেন। রহিম উদ্দিন আরও জানান, গৌহাটি থেকে মাল বোঝাই করে ধলেশ্বর আসার পর ট্রাকের খালাসী গাড়ি থেকে নেমে নিজের ঘরে চলে আসে এর পর শ্রীকোনা এলাকায় একদিন এক রাত্রি গাড়িটির অবস্থান পাওয়া যায়। এরপরই সেখান থেকে আর মাল সহ গাড়ি কিংবা চালকের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

গত ১১ জানুয়ারি খবর পাওয়া যায় শিলচর শহরের ন্যাশনাল হাইওয়ের ড্রেনে একটি মৃত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়ে প্রয়াত চালক বিধান দত্তের পরিবার ছুটে যান শিলচর এবং মরদেহ অতিরিক্ত ফুলে যাওয়ায় সনাক্ত করতে অক্ষম হন। পুনরায় ১৩ জানুয়ারি মরদেহ মর্গে থাকার দরুন কিছুটা শুকিয়ে গেলে চালক বিধানের মা নিজের সন্তানের বুকে ছোট বেলার একটি আঘাতে চিহ্ন চোখে পড়ে এবং নিজের সন্তানের মরদেহ সনাক্ত করতে সক্ষম হন। এর কাছাড় জেলার পুলিশ সহযোগে মৃতদেহ ময়না তদন্ত করে কাটলিছড়া আপিন গ্রান্টের নিজ ঘরে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন। নিজ গ্রামে মৃতদেহ পৌঁছার সাথে সাথেই পরিচিত ও বন্ধু মহলে ভিড় জমে। এরপর সম্পূর্ণ হিন্দু রীতি অনুসারে কাটলিছড়া আইটিআই নিকটস্থ শ্মশান ঘাটে চালক বিধানের মরদেহ শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। প্রয়াতের আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতি মহল কাছাড় পুলিশ ও হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসনের কাছে উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।