ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতায় নির্বাচিত প্রতিনিধি? কাজিরবাজার–পলডহর জিপির দুই সদস্যার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগে তোলপাড় গোটা এলাকা

অভিযোগ উঠেছে, এই দুই সদস্যা ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট জমা দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। এ নিয়ে গোটা গ্রাম পঞ্চায়েতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, যারা সত্যিকারের পড়াশোনা করে পরিশ্রমের মাধ্যমে সার্টিফিকেট অর্জন করে, তাদের আত্মত্যাগের দাম কি এইভাবে ভুয়ো কাগজে হরণ করা যায়? গ্রামের একাংশের অভিযোগ, সাহানা বেগম ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে অসম সংস্কৃত বোর্ডের অধীনে ‘প্রবেশিকা’ পরীক্ষার যে সার্টিফিকেট হলফনামায় জমা দিয়েছেন, সেটি ভুয়ো।

তিনি দাবি করেছেন, কানাইলাল জিউ হাইস্কুল থেকে পরীক্ষায় বসেছিলেন। রোল নম্বর: ০২৪, নম্বর: ০১২২, ও সার্টিফিকেট ক্রমিক নম্বর: ১৮৪৯৩। কিন্তু সংস্কৃত বোর্ডের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে সর্বমোট উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১২,১৯৯ জন, অর্থাৎ ১৮৪৯৩ নম্বর কোনওভাবেই বৈধ নয়। উপরন্তু, তিনি ‘দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ’ বলে যেটা দাবি করেছেন, সেই তালিকায়ও তাঁর নাম নেই। গ্রামবাসীদের সোজাসাপ্টা অভিযোগ এই সার্টিফিকেট ভুয়ো, আর সেটা দিয়েই তিনি পঞ্চায়েতে পৌঁছেছেন।

৮ নম্বরের পর ৯ নম্বর ওয়ার্ড। এখানেও চিত্রটা প্রায় এক। প্রবীণ নাগরিকদের একাংশ জানিয়েছেন, রাজিয়া বেগম যে শিক্ষাগত যোগ্যতার হলফনামা জমা দিয়েছেন, তারও সত্যতা নিয়ে বড়সড় সন্দেহ রয়েছে। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, তিনি হয়তো সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছেন টাকার বিনিময়ে, পড়াশোনার মাধ্যমে নয়। একজন প্রবীণ শিক্ষক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আমরা যেসব ছাত্রছাত্রীদের কষ্ট করে পড়াই, তারা দিনরাত এক করে পরীক্ষা দিয়ে পাস করে।

আজ দেখি, টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট জোগাড় করলেই জনপ্রতিনিধি হওয়া যায়! এটা সমাজের প্রতি প্রতারণা। এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পর পাথারকান্দি ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের পক্ষ থেকে দুই অভিযুক্ত সদস্যার নামে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, ১৪ জুলাই দুপুর ১২টার মধ্যে তাদের নিজ নিজ শিক্ষাগত যোগ্যতার আসল সার্টিফিকেটসহ ব্লক অফিসে হাজিরা দিতে হবে।

এই তলবকে ঘিরে গ্রামে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। রাজনৈতিক মহলও বিষয়টির দিকে কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। যদি অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়, তবে শুধু দুই সদস্যার সদস্যপদ বাতিলই নয়, গোটা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনৈতিক ভারসাম্য আমূল বদলে যেতে পারে। তবে প্রশ্ন হল নির্বাচন কমিশন কীভাবে এই জাল নথি যাচাই না করেই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করল? তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হলে কেবল সদস্যপদ বাতিল হবে, না কি ফৌজদারি মামলা করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে?

Related Posts

মিয়ানমারের ৪.৭ মাত্রার রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মণিপুর, নাগাল্যান্ড সহ আসাম, এখনো হতাহতের খবর নেই, আতঙ্কে বহু মানুষ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। সকাল ৬টা ১০ মিনিটের সময় বহু মানুষ এখনো ঘুমের রাজ্যে। সেই সময় আচমকা কেঁপে ওঠে মাটি। প্রথমে…

শিলচর ডিসি অফিসে বাবু সিণ্ডিকেটের চাঁই সৌমিত্র নাথ ধর্ষণ অভিযোগে গ্রেফতার

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৩০ সেপ্টেম্বরঃ শিলচর শহর কেঁপে উঠেছে জেলা কমিশনারের কার্যালয়কেন্দ্রিক এক নারীর প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতনের ঘটনায়। সরকারি দফতরের ভেতরেই যখন নারী সহকর্মী নিরাপদ নন, তখন সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার…