
বরাকবাণী প্রতিবেদন শ্রীভুমি ১৯ মেঃ বাঙালিরা নিজের ভাষার পাশাপাশি অন্যের ভাষা কেও শ্রদ্ধা ও মর্যাদা জানায় । উনিশের চেতনার বরাকের উপত্যকার শ্রীভূমি শহরের হাজারো ভাষাপ্রেমিকের দৃপ্ত কণ্ঠে গর্জে উঠল মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার দাবি। অসমের বাংলা ভাষার গর্ভগৃহ বরাকের মাটিতে এগারোটি তাজা প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষার অধিকার এবং বহুভাষিক ঐক্যকে অক্ষুণ্ণ রাখার আহ্বান জানালেন ৬১ ভাষা আন্দোলনের সৈনিক সমাজকর্মী সতু রায়।
আজ শ্রীভূমির শম্ভু সাগর উদ্যানের জাতীয় শহিদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে উনিশের পথচলার শুভ সূচনা করে সতু রায় বলেন আজকের প্রজন্মের কাছে অঙ্গীকারের বার্তা দিয়ে বলেন সময়ের সঙ্গে সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে তবে ভাষা সংস্কৃতির পরিবর্তন না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে কারণ প্রতি মুহূর্তে ভাষা আগ্রাসনের তারা করছে আমাদেকে ।
তিনি বলেন মহামিছিলের আয়োজন করা হয় আমাদের মধ্যে চেতনা জগতে বিগত বছরের পর উনিশের চেতনায় সমৃদ্ধ একটি অরাজনৈতিক পথ চলার নীরব সাক্ষী হয়ে রইল শ্রীভূমি শহরের রাজপথ। বৃষ্টি কে উপেক্ষা করে সীমান্ত শহরের বুকে এদিন নেমে আসে হাজারো ভাষাপ্রেমীর বাঁধভাঙা জোয়ার। ভাষার আবেগ এবং অমর উনিশের ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে জেলা সদরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পাশাপাশি বাজারিছড়া, রামকৃষ্ণনগর, পাথারকান্দি, বদরপুর, শ্রীগৌরী,নিলামবাজার, চরগোলা অঞ্চল সহ গ্রাম-গ্রামান্তরের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা মিছিলে পা মেলান।
“বরাকের আওয়াজ’ এর উনিশের পথচলার উদাত্ত আহ্বানে জেলার বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতৃবর্গ রাজনৈতিক মতাদর্শকেপেছনে ফেলে ভাষার অধিকার রক্ষার সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। দিনভর কাঠফাঁটা রোদ্দুর আর অসহনীয় ভ্যাপসা গরম আর পথযাত্রার সময় বৃষ্টি থাকা সত্ত্বেও মিছিলের ডাকে সাড়া দিতে অনেক আগে থেকেই সবাই শম্ভু সাগর উদ্যান জড়ো হন সবাই। ঘড়িতে কাঁটায় কাঁটায় চারটা বাজতেই একাদশ ভাষা শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা অর্পণ করে সবাই হাতে ফেস্টুন আর মুখে অধিকার প্রতিষ্ঠার স্লোগান নিয়ে রাজপথ মুখরিত হয়ে ওঠে।নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তির পাদদেশে (ইয়ুথ ইউনিটি ক্লাবের) প্রাঙ্গণে পথচলার সমবেত হন ।
সেখানে হাজারো ভাষাপ্রেমীর উপস্থিতিতে আহত এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে ভাষা সেনানি সুখেন্দুবিকাশ পাল,৬১ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন আমরা গর্বিত বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা ভাষা আন্দোলন কে চেতনা ময়করে রেখেছে । সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজকের এই বিশাল পথচলার প্রতিটি মুহূর্তে স্মরনীয় হয়ে থাকবে । বরাকের আওয়াজের পক্ষে গোটা অনুষ্টানের তাৎপর্য নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা করেন আহবায়ক অরূপ রায়।
তাছাড়া এদিনের পথচলায় সামিল হতে দেখা যায় নুপুর নৃত্যালয়, ড, প্রমোদ রঞ্জন চৌধুরী শিশু নিকেতন,গীতবিতান সাংস্কৃতিক সংস্থা, শ্রীভূমি সরস্বতী মহাবিদ্যালয়, সুর মন্দির, সুর সপ্তক,সর্ব ভারতীয় সিলেটি ফোরাম, সরস্বতী বিদ্যা নিকেতন, সমন্বয়ক সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়, খুশি স্মৃতি সংস্থা, নৃত্য ঘথা কলা কেন্দ্র, ভূমিকা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা, যোগমায়া সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়, চারনিক, নবতরঙ, মহর্ষি বিদ্যামন্দির সহ অগণিত সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের।