
বরাকবাণী প্রতিবেদন কাটিগড়া ১৮ মেঃ বরাক উপত্যকার গুণীজনদের হাত ধরে আগামী ১৯শে মে কালাইনের পাদ্রীটিলায় উন্মোচিত হবে নবনিৰ্মিত শহীদ বেদী। স্টার সিমেন্টের আর্থিক সহায়তায় কালাইনের অদুরবর্তী পাদ্রীটিলা চিত্রকোণা সর্বজনীন কালীবাড়ির পাশে, বিশিষ্ট সমাজসেবী সমরেন্দ্র দেবের একখন্ড জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে এই বেদী। এ অঞ্চলের ভাষা শহীদ স্মরণ সমিতির উদ্যোগে আগামী ১৯শে মে ভাষা শহীদ দিবসে আনুষ্ঠানিক ভাবে নবনির্মিত এই শহীদ স্তম্ভের উন্মোচন করা হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডঃ তপোধীর ভট্টাচার্য। সম্মানীয় অতিথি স্টার সিমেন্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার বির্জো পান্ডে, বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের সভাপতি সঞ্জীব দেবল লস্কর, কাটিগড়ার বিধায়ক খলিল উদ্দিন মজুমদার, দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী, নিখিল ভারত বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী মহাসভার মহাসচিব ডঃ স্বপন সিংহ, বিহাড়া দেশবন্ধু ক্লাবের সভাপতি ডঃ সঞ্জীব শিকিদার, কাছাড় জেলা আইনজীবী সংস্থার সভাপতি দুলাল মিত্র, ভাষা সংগ্রামী গৌরীর শংকর ভট্টাচার্য, সমাজসেবী মানস কান্তি চক্রবর্তী, রবীন্দ্রনারায়ন আচার্য, বিপ্লব কান্তি পাল, কৃষ্ণ দাস সিনহা, সন্দীপ দাস প্রমুখ।
উল্লেখ্য ১৯৬১ সালের ১৯ শে, মে বরাক উপত্যকায় বাংলাকে সরকারি ভাষায় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে আত্ম বলিদান দিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন। শহীদরা হলেন কমলা ভট্টাচার্য, সুকমল পুরকায়স্থ, সত্যেন্দ্র দেব, সুনীল সরকার, কানাই লাল নিয়োগ, চন্দ্রিচরণ সূত্রধর, বীরেন্দ্র সূত্রধর, তরুণী দেবনাথ, শচীন্দ্র পাল, কুমুদ রঞ্জন দাস, হিতেশ বিশ্বাস, এই ১১ জন তরুণ তরুণীর প্রাণ উৎসর্গের জন্যই ১৯ মে বরাকে বাংলা সরকারি ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে।
কিন্তু আজও সরকারিভাবে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা না দিলেও যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত হুতাত্মা বেদীর উন্মোচন করা হয়েছে, করা হবে। বাঙালিরা যতদিন বেঁচে থাকবে শহীদদের মর্যাদার সহিত তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে স্মরণ করবে প্রতিবছর এই দিনে। অনুরূপভাবে ১৯৭২ সালে ১৭ আগস্ট বিজন চক্রবর্তী (বাচ্চু)১৯৮৬ সালে ২১শে জুলাই জগন্ময় দেব (জগন) দিব্যেন্দু দাস (যীশু)শহীদ হয়েছেন।
১৯৯৬ সালে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা সরকারি স্বীকৃতি লাভের দাবিতে সুদেশনা সিনহা শহীদ হন। উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এই দিবসটি পালন করা হবে। আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ শহীদদের আত্ম বলিদান নিয়ে বিশদ আলোচনা করবেন। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান এ অঞ্চলের ভাষা শহীদ স্মরণ সমিতির কর্মকর্তাগণ।