২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল বলছেন বিজেপি নেতৃত্ব, চার জেলা পরিষদ আসনে নিরঙ্কুশ জয়ে উচ্ছ্বসিত শাসক শিবির

অন্যদিকে রাতাবাড়ী বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিজয় মালাকার বলেন, “রাতাবাড়ীর মানুষ আমাদের যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা তাঁদের চরণ ধুয়ে জল পান করলেও সেই ঋণ শোধ হবে না। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ভোট গণনা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার কারণে কিছুটা বিলম্বে শুরু হলেও গোটা রামকৃষ্ণনগর এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই গণনা সম্পন্ন হয়।

সোমবার বিকেল পর্যন্ত চলে গণনার প্রক্রিয়া। চারটি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে চেরাগী, দুর্লভচড়া, আনিপুর ও ভৈরবনগর সবগুলোতেই দখল নিয়েছে শাসক দল বিজেপি। কংগ্রেস ও নির্দল মিলে একটি মাত্র পঞ্চায়েত আসনেও জয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি।

চেরাগী জেলা পরিষদ-এখানে বিজেপির পঙ্কজ রায় শর্মা বিপুল ভোটে জয়ী হন। তিনি পান ২২,০৯৮টি ভোট, যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী কুবের প্রসাদ যাদব পান মাত্র ৬,৭৭৬টি ভোট। ব্যবধান ১৫,৩২২ ভোট। দুর্লভচড়া জেলা পরিষদ-বিজেপির প্রণব মুখার্জি এখানে ১৫,৭৩৯ ভোট পেয়ে নির্দল প্রার্থী মৃত্যুঞ্জয় নাথকে হারান, যিনি পান ৬,০৩৯টি ভোট। ব্যবধান –৯,৭০০ ভোট।

আনিপুর জেলা পরিষদ-এই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় প্রথমে কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও শেষ হাসি হাসে বিজেপি। রেজোয়ানা বেগম ২৩,২৬৪ ভোট পেয়ে কংগ্রেস প্রার্থীকে (১৮,২৯৭ ভোট) ৪,৫৬৭ ভোটের ব্যবধানে হারান। ভৈরবনগর জেলা পরিষদ-এখানে যুব নেতা রাজেশ দাসের অভূতপূর্ব উত্থান দেখা যায়।

তিনি পান ২৬,৫৭৮টি ভোট, যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী সুমন্ত দাস পান মাত্র ৮,৫৭২ ভোট। বিশাল ব্যবধান–১৮,০২৮ ভোট। এই অভাবনীয় জয়ের পর রাজেশ দাস বলেন, এই জয় জনগণের আশীর্বাদ। রাতাবাড়ী আবার প্রমাণ করল, উন্নয়নের রাজনীতি নিয়ে বিজেপিই একমাত্র ভরসা।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল রাতাবাড়ী সহ বরাক উপত্যকার রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের বার্তা দিয়ে দিল। কংগ্রেসের ভরাডুবি এবং নির্দলদের অস্তিত্বহীনতা আগামী নির্বাচনে তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

রাতাবাড়ীর রাজনীতি এখন বিজেপির ঢেউয়ে ভেসে যাচ্ছে–এ কথা বলাই যায়। শাসক দলের আত্মবিশ্বাস যেখানে তুঙ্গে, সেখানে বিরোধীদের জন্য ভবিষ্যৎ যেন অনিশ্চয়তার কালো মেঘে ঢাকা। এই পঞ্চায়েতের ফলাফলের রেশ কেবল এই অঞ্চলে নয়, রাজ্য রাজনীতিতেও দীর্ঘদিন অনুভূত হবে–এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

Related Posts

শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…