
বরাকবাণী প্রতিবেদন হাইলাকান্দি ১২ মেঃ: স্বাধীনতার ৭৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও দক্ষিণ হাইলাকান্দির জামিরা ৪র্থ খণ্ডের অন্তর্গত পাঁচ পীরের মোকাম বস্তী এখনও উন্নয়নের আলো থেকে বহু দূরে। অসম-মিজোরাম সীমান্তবর্তী এই এলাকার মানুষ যেন সরকারের কাছে একেবারেই অবহেলিত। অথচ প্রশাসনিক নথি অনুযায়ী, এই এলাকায় ১২৬ নং ও ১৯৩ নং দুটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। বাস্তবে অবশ্য এই কেন্দ্র দুটি শুধুই কাগজে কলমে।
সম্প্রতি শনিবার, সরকারি উদ্যোগে স্কুল ব্যাগ, ইউনিফর্ম, টিফিন বক্স সহ নানা শিক্ষা-সামগ্রী বিতরণের জন্য এই কেন্দ্র দু’টির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলেও, বাস্তবে কোনো সেন্টার না থাকায় সেই সমস্ত সামগ্রী ৬-৭ কিলোমিটার দূরের ঘারমুড়া এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই, ঝালনাছড়া আঞ্চলিক ছাত্র সংস্থা (আসু’র) এক প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
সেখানে উপস্থিত হয়ে ১৯৩ নং কেন্দ্রের ওয়ার্কার রেজিয়া বেগম ও হেল্পার জানান, এই সেন্টারটি কেবল কাগজে কলমে রয়েছে। বাস্তবে কোনো অবকাঠামো, ভবন বা কার্যক্রম নেই। তাহলে আমরা এই সামগ্রী কোথায় রেখে দিতাম? তাঁদের কথায় স্পষ্ট, কোনও স্থায়ী কেন্দ্র না থাকায় তারা স্থানীয় ম্যানেজমেন্ট কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই অন্যত্র সামগ্রী বিতরণ করেছেন।

এই ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঝালনাছড়া আঞ্চলিক ছাত্র সংস্থার সভাপতি ফারুক আহমদ বড়ভূইয়া। তিনি বলেন, দুটি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত সেখানে কোনো শিক্ষা কার্যক্রম নেই। এটা একটা ভয়াবহ অব্যবস্থাপনা ও চরম অবহেলার নিদর্শন।
আমরা সাউথ হাইলাকান্দি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অফিসারকে এই দুরবস্থার জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী করছি। তিনি আরও জানান, এই অঞ্চলের শিশুরা একেবারে প্রাথমিক পর্যায় থেকেই শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অতি দ্রুত পাঁচ পীরের মোকাম বস্তীতে স্থায়ী ও কার্যকর অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার চালু করতে হবে,
এটাই এখন আমাদের প্রধান দাবি। এই দিনে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জাকির হুসেন মজুমদার, সহ সম্পাদক জুবাইর আহমদ মজুমদার, সহ সভাপতি কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, উপদেষ্টা ছৈদ আহমদ লস্কর এবং স্থানীয় বহু অভিভাবক।
উল্লেখযোগ্য যে, এমন দুর্গম ও অবহেলিত এলাকায় শিক্ষার বুনিয়াদি পরিকাঠামো না থাকা শুধুমাত্র শিশুদের ভবিষ্যৎকেই অন্ধকার করে তুলছে না, বরং পুরো সমাজকেই ঠেলে দিচ্ছে অনিশ্চয়তার দিকে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কবে জেগে ওঠে এবং এই অঞ্চলের শিশুদের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়।