
বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর ৫ মেঃ গুজরাট-ওড়িশায় বাঙালী শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের ওপর চড়াও-মারধর ও বিতাড়নে বিজেপির মদত রয়েছে বলে অভিযোগ এনেছে ‘আমরা বাঙালী রাজনৈতিক সংগঠন। গুজরাট-উড়িষ্যায় বাঙালীদের নির্যাতন-বিতাড়নের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যমগ্রামের গঙ্গানগর মোড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সংগঠনটি।
এদিনের বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন, আমরা বাঙালীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় প্রকাশন সচিব উজ্জ্বল ঘোষ, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সচিব অনিতা চন্দ, কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব মোহনলাল অধিকারী, জেলা সচিব শুভজিৎ পাল, মিন্টু বিশ্বাস, সমর দাস, সাগরিকা পাল, সুশীল জানা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
রাজ্যে রাজ্যে ভারতীয় বাঙালীরা যদি বিদেশী হয়, তাহলে বাঙলায় বসবাসকারী সমস্ত অবাঙালী অবিলম্বে বাঙলা ছাড়ো এই বলে হুঙ্কার দেন বাঙালী জাতির সংগ্রামী নেতা ‘আমরা বাঙালী’র সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি গুজরাট, উড়িষ্যা সহ মূলত ডবল ইঞ্জিনের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালীদের ওপর চরম সন্ত্রাস সংগঠিত হচ্ছে!
বাংলাদেশী অপবাদ দিয়ে ভারতীয় বাঙালী-বর্ধমান, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলের বাঙালী শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন ও বিতাড়ন চলছে (বিজেপি) সরকারী মদতে! পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এখনও চোখে কালো চশমা আর মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে বসে আছেন, ধিক-ধিক-ধিক্কার আপনাকে। বিজেপির হিন্দী-হিন্দু-হিন্দুস্থান চক্রান্তের মূল বাধা হয়েছে, বাঙালী। দেশজুড়ে হিন্দু মুসলমান আগুন জ্বালানোর রাজনীতিকে বাঙালীর সম্প্রীতির সংস্কৃতি চ্যালেঞ্জ ছোড়ে বরাবর।
সেই সাংস্কৃতিক আবহকে পুরোপুরি উগ্র সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধতায় পর্যবসিত করতে না পারলেও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও সাজানো তৈরী করা কিছু সাম্প্রদায়িক লড়াইয়ের বাতাবরণ তৈরি করে সেই সম্প্রীতির সহাবস্থানের পরিবেশকে আক্রান্ত করে তুলেছে।
এবার বাঙালী বিদ্বেষী বিজেপির টার্গেট রাজ্যে রাজ্যে বাঙালী নির্যাতন করে বাঙালীদের পদতলে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে ফেলা ও ভারতীয় বাঙালীদের তাড়িয়ে হিন্দুদের কাছে বাংলাদেশী তাড়ানোর মিথ্যের ঢাক পেটিয়ে ক্ষমতা দখল।
বাঙালীদের বলির পাঁঠা করলে কোন অসুবিধে নেই। ১৯৪৭-এ দেশভাগের অছিলায় হাজার বাঙালীকে ভিটে-মাটি-সংসার-পরিবার-পরিজন-মান-সম্ভ্রম-ইজ্জ্বত ত্যাগ করতে বাধ্য করা হোক বা পরবর্তীতে নানা সময়ে বাঙালীদের ওপর উগ্র হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন হোক সাধারণ বাঙালীদের রাজনীতি করে, হিন্দু-মুসলিম করে বিভেদ তৈরি করে বাঙালীদেরকে নিজেদের মধ্যে লড়াই লাগানো যায়। না আর নয়, বাঙালীকে আর ঘুম পাড়িয়ে রাখা যাবে না। ‘আমরা বাঙালী’ বাঙালীকে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে দেবে না।
তাই বন্ধুরা এসো সবাই, আসুন সবাই হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। এই বাঙলায় হাজারও উড়িয়া করে-কম্মে নিজে খাচ্ছে উড়িষ্যায় থাকা পরিবারকেও বাঙালীদের অর্থেই খাওয়াচ্ছে, উড়িষ্যা-পূরী মূলত বাঙালী কেন্দ্রীক পর্যটন কেন্দ্র সেখানেও রোজগার হচ্ছে বাঙালীদের টাকায়।
আর বাঙালীর অর্থে পুষ্ট এই উড়ে গুলোই বাঙালীদের তাড়াচ্ছে! সাহস কত বড়, বাঙলার মুখ্যমন্ত্রী চুপ!! ওখানে যদি বাঙালী তাড়ানো চলে, এখানেও উড়ে-গুজ্জু-মেড়ো তাড়ানো শুরু হবে। এই কাজ কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এই কাজ জাতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, বাঙালীদের স্বার্থে।
এক বিষয় জেনে রাখা দরকার, বিজেপি কোনদিনও হিন্দু বাঙালীদের কল্যাণ চায়নি। বিজেপির অসমে এন.আর.সি-র নামে ডিটেনশন ক্যাম্প নামক জেলখানায় বন্দীরত ১৯লক্ষ বাঙালীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু বাঙালী! হিন্দু বাঙালী হলে বিজেপির কাছে নিম্ন শ্রেণীর অচ্ছুত হিন্দু।
তাই বাঙালী জাতির কাছে আবারও আহ্বান রাখছি গোটা দেশজুড়ে যে বাঙালী উৎখাতের ষড়যন্ত্র কায়েম করছে বিজেপির হিন্দী সাম্রাজ্যবাদ, এর বিরুদ্ধে সমস্ত বাঙালী ধর্মমতীয়, রাজনৈতিক সহ সর্বপ্রকারের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হন।