
বরাকবাণী প্রতিবেদন কাটিগড়া ২০এপ্রিল: রবিবার দুপুরে হৃদয়বিদারক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন কাটিগড়া এলাকার দুই যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে অসমের হোজাই থেকে বাড়ি ফেরার পথে, লালটিন থানাধীন হাতিখালি এলাকায়। হিট অ্যান্ড রান কায়দায় সংঘটিত এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নেওয়াজ আহমদ চৌধুরী ও অমল কুমার দত্ত নামক দুই ব্যক্তির।
নিহত নেওয়াজ আহমদ চৌধুরী, যিনি ‘বাপ্পন’ নামেও এলাকায় পরিচিত ছিলেন, কাটিগড়া তৃতীয় খণ্ডের বাসিন্দা। পেশায় একজন গাড়ি চালক বাপ্পন চৌধুরী রবিবার সকালে নিজের বলেরো গাড়ি (নম্বর UP 52 BU8397) নিয়ে হোজাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন।
উদ্দেশ্য ছিল তার পুত্র তৌসিফ জামান চৌধুরীকে বাড়ি নিয়ে আসা, যিনি হোজাইয়ের আজমল সুপার ফোরটিতে পড়াশোনা করতেন। সাথে ছিলেন তার বন্ধু, কাতিরাইলের বাসিন্দা এবং গাড়ি চালক অমল কুমার দত্ত, যিনি সংকু নামেও পরিচিত। বাড়ি ফেরার পথে, হাতিখালি এলাকায় এক দ্রুতগামী অজ্ঞাত গাড়ি এসে সজোরে ধাক্কা মারে তাদের বলেরো গাড়িতে। ভয়ানক সংঘর্ষে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার চেষ্টা করলেও ততক্ষণে সব শেষ—ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বাপ্পন ও সংকু। তাদের সঙ্গে থাকা বাপ্পনের পুত্র তৌসিফ জামান চৌধুরী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় গোটা কাটিগড়া জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকায় পরিচিত মুখ ছিলেন বাপ্পন ও সংকু। তাদের মৃত্যু যেন এক অসময়ে চলে যাওয়া দুই প্রজ্জ্বলিত প্রদীপের মতো, যা হঠাৎই নিভে গেলো এক নিষ্ঠুর দুর্ঘটনার আঘাতে। স্থানীয়রা পুলিশের কাছে দাবি তুলেছে, এই হিট অ্যান্ড রান ঘটনার পেছনে দায়ী গাড়িটিকে দ্রুত শনাক্ত করে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ ঘটনায় লালটিন থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। এ যেন এক অশ্রুসিক্ত প্রশ্ন রেখে যাওয়া—একজন পিতা যখন সন্তানের মুখ দেখতে রওনা দেন, তখন কি ভাবেন যে সেটাই হবে শেষবারের মতো দেখা? কাটিগড়ার মানুষ আজ সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে বিষণ্ণ চোখে।