লক্ষীপুরে কংগ্রেসের অস্তিত্ব সংকটে, জনতার আস্থা হারিয়ে, কবর খুঁড়ছে নিজেরাই! দাপুটে অতীত ভুলে আজ নেতৃত্বহীন লক্ষীপুর কংগ্রেস

বিজেপি যখন লক্ষীপুরে মন্ত্রী কৌশিক রায়ের নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বর্ণাঢ্য মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিল, তখন কংগ্রেসের অবস্থা ছিল করুণ। গুটিকয়েক প্রার্থী নীরবে এসে মনোনয়ন জমা দিলেও দলের তরফে না ছিল কোনো জোরালো উপস্থিতি, না ছিল জনসমর্থনের ঝলক। বরং ক্যামেরার সামনে কিছু নেতার ‘আমি আছি’ গোছের উপস্থিতি কংগ্রেসের শূন্যতা ঢাকতে পারেনি। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস জেলা পরিষদের চারটি আসনে প্রার্থী দিলেও একত্রিশটি আঞ্চলিক পঞ্চায়েত আসনের অনেকগুলোতেই তারা প্রার্থীই দিতে পারেনি। এই ব্যর্থতা শুধু কৌশলগত নয়, সাংগঠনিক ভাঙনের সরাসরি প্রমাণ। এমনকি স্থানীয় কর্মীরা মুখ খুলে বলছেন, উপরমহলের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং টিকিট বণ্টনে স্বজনপ্রীতির কারণে আজ আমরা মাঠে নামার আগেই হেরে গেছি।

মন্ত্রী কৌশিক রায় কংগ্রেসের এই করুণ অবস্থাকে কটাক্ষ করে বলেন, “কংগ্রেস কোথায়? তারা প্রার্থী দেবে কীভাবে?” তিনি আরো বলেন, আমরা বিরোধী থাকাকালীন জোরালো লড়াই করেছি, প্রার্থী দিয়েছি। কিন্তু আজ কংগ্রেস কোনো ভূমিকায়ই নেই। মানুষ এখন উন্নয়নকে বেছে নিয়েছে, বিভ্রান্তিকে নয়। লক্ষীপুর কংগ্রেস এখন যেন ভগ্নাবশেষের ওপর দাঁড়িয়ে সময় পার করছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে শুরু করে স্থানীয় স্তর পর্যন্ত পরিকল্পনার অভাব, তরুণ নেতৃত্বকে জায়গা না দেওয়া, সাংগঠনিকভাবে জনতার সঙ্গে দূরত্ব—সব মিলিয়ে কংগ্রেস নিজের কবর নিজেই খুঁড়ছে। বিজেপি একদিকে মাটি থেকে উঠে এসে জনতার আস্থা অর্জন করেছে, অন্যদিকে কংগ্রেস তার নিজের ঘাঁটিতেই মাটি হারিয়েছে।

দলের একাংশ মনে করছে, যদি এখনই নেতৃত্বে রদবদল এবং স্বচ্ছ কর্মপন্থা না আসে, তাহলে ভবিষ্যতে কংগ্রেস শুধু ব্যালটেই নয়, মানুষের মন থেকেও মুছে যাবে। কর্মীরা বলছেন, আজ যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা মাঠে নামেন না, শুধু মিডিয়ায় মুখ দেখিয়ে দায় সারেন। লক্ষীপুরে আজ কংগ্রেস অস্তিত্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে। একসময় যেখানে দলীয় প্রতীকই ছিল ভোট বৈতরণীর তরণী, আজ সেখানে কংগ্রেস তার প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না। এমন রাজনৈতিক সংকটে যদি কংগ্রেস জেগে না ওঠে, তবে আগামী দিনে শুধুই ইতিহাসের পাতায় থেকে যাবে এক সময়ের ‘কংগ্রেস রাজ’।

  • Related Posts

    শাসক দলের চাঁদাবাজ কয়লা, সুপারি চুন পাথর, সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের রাজত্বে বরাক অশান্তির পথে: গৌরব গগৈর গুরুতর অভিযোগ

    বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর, ৬ জুন: আসামের বন্যা বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকা পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর সরকারি ব্যর্থতার এক জ্বলন্ত নিদর্শনে। সফরের দ্বিতীয় দিনে আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা…

    ঈদের প্রাক্কালে অবৈধ গরুর বাজারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গো-রক্ষা বিভাগ

    বরাকবাণী প্রতিবেদন,পাথারকান্দি,৬ জুন:  ঈদের প্রাক্কালে শ্রীভূমি জেলায় অবৈধ গরুর বাজার বন্ধের দাবিতে শ্রীভূমি জেলা আয়ুক্তের মারফৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ তথা রাজ্যের মীন,পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী  কৃষ্ণেন্দু পালের হাতে…