
বরাকবাণী প্রতিবেদন কালাইন ২৯ মার্চ কালাইনের ভৈরবপুরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা সামনে এসেছে, এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। শুক্রবার সকালে কালাইনের সরকারি হাসপাতালে এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর, এটি হত্যা না আত্মহত্যা সে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। পুলিশের তদন্তে কি উঠে আসবে, তা নিয়ে অপেক্ষায় এলাকাবাসী। ভৈরবপুর দ্বিতীয় খণ্ডের বাসিন্দা শাহীন আহমেদের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে হত্যার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, শাহীন দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে তার ও এক নারীর ছবি ভাইরাল হওয়ার পর, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও তীব্র হয়ে ওঠে। পারিবারিক অশান্তি চরমে পৌঁছায় এবং অভিযোগ অনুযায়ী, শাহীন তার স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতে শুরু করেন। বৃহস্পতিবার রাতে শাহীন আহমেদ তার স্ত্রীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালাইনের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা চলতে থাকে, তবে শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে ওই মহিলা তার ভাইকে ফোন করে সবকিছু জানিয়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি ফোনে জানান, স্বামী তাকে বিষ পান করিয়েছে। মহিলার পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন, এটি নিছক আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যা। তারা অভিযোগ করেছেন যে শাহীন আহমেদ তার স্ত্রীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে স্থানীয় থানার ওসি জানান, “আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। যদি এটি হত্যা হয়, তাহলে দোষীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর, কালাইনের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং ন্যায়বিচারের দাবি তুলেছেন। স্থানীয় মহিলারা বলেন, “নারী নির্যাতনের ঘটনা যদি বারবার উপেক্ষা করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও এমন ঘটনা ঘটবে। পুলিশকে যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

কালাইনের ভৈরবপুর গ্রামে এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলো এলাকাবাসী। ইসলাম উদ্দিনের অভিযোগ অনুযায়ী, তার বোনের দাম্পত্য জীবনে দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি চলছিল। একদিকে পরকীয়ার সন্দেহ, অন্যদিকে পারিবারিক কলহ—এই দুইয়ের জেরে ঘটনার পরিণতি দাঁড়িয়েছে তার বোনের মৃত্যুতে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ইসলাম উদ্দিন অভিযোগ করেন, তার দুলাভাই শাহীন আহমেদ পরিকল্পিতভাবে তার বোনকে বিষ পান করিয়ে হত্যা করেছে। তিনি দাবি করেন, পরকীয়ার বিষয়টি সামনে আসার পর থেকে তার বোনকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হতো। ফেসবুকে একটি ছবি ঘিরে দাম্পত্য কলহ আরও প্রকট হয়, যার চূড়ান্ত পরিণতি এই মর্মান্তিক মৃত্যু। ঘটনার পর শুক্রবার দুপুরে কালাইন পুলিশ মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। হাসপাতালের পরিবেশ লক্ষ্য করে স্থানীয়রা মন্তব্য করেন, মৃতার পরিবারের লোকজনই শুধু সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ছেলে পক্ষ থেকে একমাত্র শাহীন আহমেদকেই দেখা গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং শাহীনের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে—এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্যদিকে, শাহীন আহমেদ সংবাদমাধ্যমের সামনে তার নির্দোষত্ব দাবি করেন। তিনি জানান, তার স্ত্রীর সঙ্গে গত তিন মাস ধরে কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না এবং পরকীয়ার অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তার দাবি, স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্কের মধ্যে যথেষ্ট আন্তরিক ভালোবাসা ছিল এবং এই মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তারা পুলিশের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন, যাতে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হয়। ময়না তদন্তের রিপোর্ট ও পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতে জানা যাবে, এটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা। এখন শুধু অপেক্ষা, প্রকৃত সত্য উদঘাটনের।