
বাবা সরকারি মুহরি আলিয়াস ও ছেলের সইফুল ভুমাফিয়া তাদের যুগলবন্দীতে চলছে ভারত মালা প্রকল্পে বৃহৎ জমি কেলেঙ্কারি!
কাটিগড়ায় জমি দখলের চক্র সক্রিয় ! জমির সত্ত্বাধিকারীকে অন্ধকারে রেখে ভুয়ো নথি-পত্র তৈরি করে জমি রেজিস্ট্রির গুরুতর অভিযোগ
ড. নিখিল দাশ, বরাকবাণী, শিলচর, ৩০ শে জানুয়ারিঃ কাছাড়ে ভারতমালা প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়মের কেচ্ছা-কাহিনী শুরু থেকেই মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে। ভারত মালা প্রকল্পকে কেন্দ্র করে জিরাত কেলেঙ্কারি, জমি কেলেঙ্কারি লাগামছাড়া হাবে চলছে। কাটিগড়া অঞ্চলেও ভারত মালা প্রকল্পে লাগামছাড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে দীর্ঘদিন ধরে। একদিকে ভূমাফিয়া এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিক-কর্মীদের পোয়াবারো। অন্যদিকে, জমি মালিক দুঃস্থ, দরিদ্র জমি মালিকরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ভুয়ো দলিল তৈরি করে দরিদ্র-দুঃস্থ মানুষের জমি হড়প করে নিজের নামে করে নিয়ে ভারত মালা প্রকল্পের জমির ক্ষতিপূরণ বা জিরাতের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযান চালাচ্ছে ভূমাফিয়ারা। এমন এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর তোলপাড় লেগেছে কাটিগড়ায়।
কাটিগড়া সার্কল অফিসের মুহরি আলিয়াস আলিয়াস আহমেদের ছেলে ভূমাফিয়া সাইফুল করিমকে ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ভূ-মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় কাটিগড়া পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছিল। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে কোর্টে মামলাও চলছে। কাটিগড়া সার্কল অফিসে অবৈধভাবে ঘাঁটি গেড়ে বসে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে বলে বহু অভিযোগ রয়েছে। একজন ভূ-মাফিয়া দালাল কিভাবে অফিস চত্বরে বসে দিনের পর দিন দালালি করছে? যেহেতু তার ওপর মামলা ও চলছে। কিন্তু কার মদতে এমন আশকারা পেয়েছে ওই ভূ-মাফিয়া? জনসাধারণের অভিযোগ, বাবা ও ছেলে মিলে ভারতমালা প্রকল্পে কাটিগড়া ও কালাইন এলাকায় বৃহৎ জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। বাবা ও ছেলের নামে এমন গুরুতর অভিযোগ করার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ভারতমালা প্রকল্পে বাবা ও ছেলে মিলে সম্পূর্ণ ভুয়ো দলিল তৈরি করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলেও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।


ভারত মালা ও আসাম মালা যে সব এলাকা দিয়ে যাবে সেই সব এলাকায় মানুষের জমি সুকৌশলে নিজের আয়ত্ত করে ওই সব এলাকার জমির ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করে জমি রেজিস্ট্রিও করে ফেলে। কিন্তু আসল জমির মালিক কিছুই জানেন না। সবকিছু সাঙ্গ হওয়ার পর প্রকৃত জমি মালিক জানতে পারেন যে তাঁর জমি বিক্রি হয়ে গিয়েছে অন্যদের নামে। আসল জমির মালিককে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে এমন ভয়াবহ কেলেঙ্কারি চলছে কাটিগড়ায়। কিন্তু প্রশ্ন হল কিভাবে ভু-মাফিয়ারা ভুয়ো দলিল রেজিস্ট্রেশন করার পারমিশন পায় কিভাবে?। আসল জমি মালিকের অজ্ঞাতে ভূ-মাফিয়ারা অফিসিয়াল নথিপত্র তৈরি করে নিয়ে ফেলে। তারপর ভারতমালা ও আসাম মালা প্রকল্পের নামে জমির ক্ষতিপুরণ বা জিরাতের জন্য মুহরি, পাটোয়ারি সহ অন্যান্য আধিকারিকদের ম্যানেজ করে ভুয়ো রেজিস্ট্রেশনকৃত দলিল দেখিয়ে সরকারের টাকা আত্মসাৎ করার বৃহৎ সিন্ডিকেট চলছে। কিছু কিছু যায়গায় দালাল চক্র এভাবে লাভবানও হয়েছে।
যদি কোনও আসল জমির মালিক এই অবৈধ বিষয় জানতে পারেন তখন দালাল ও ভুয়ো জমির মালিক অফিসকে ম্যানেজ করে আসল জমির মালিককে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ঘুরাতে থাকে। ভারতমালা ও আসাম প্রকল্পের কর্তৃপক্ষকেও দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা ভুয়ো রেজিস্ট্রেশনকৃত জমির দলিল নিয়ে সেই অনুযায়ী সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। আর আসল জমির মালিকরা ন্যায্য অধিকার ও টাকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।