
জৈবসার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জল সংরক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব
বরাকবাণী প্রতিবেদন,শিলকুড়ি,২৭ জানুয়ারি: শিলকুড়ি এম ই স্কুলে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের সহায়তায় আসাম সায়েন্স টেকনোলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট কাউন্সিলের উদ্যোগে এক দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার আয়োজিত এই কর্মশালায় সিলকুড়ি শিক্ষাখণ্ডের অন্তর্গত পি কে ভাসলা হাই স্কুল, ভরা হাই স্কুল, লক্ষ্মী নারায়ণ হাই স্কুল, বরক ভেলি হাই স্কুল. সিলকুড়ি হাই স্কুল থেকে ৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন। জৈবসার, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং জল সংরক্ষণের উপর এদিনের কর্মশালার সূচনা হয় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন স্কুলের প্রধান প্রমা প্রসাদ যাদব, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল লতিফ মিয়া এবং অন্যান্য অতিথিরা।

পরিবেশ রক্ষায় জৈবসার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জল সংরক্ষণের গুরুত্ব নিয়ে প্রশিক্ষক পিংকি সিনহা ও তপন আচার্য ছাত্র-ছাত্রীদের জল সংরক্ষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক পদ্ধতি তুলে ধরেন। রসায়নিক সারের ক্ষতিকারক দিক ব্যাখ্যা করে জৈবিক সার ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন প্রশিক্ষক মতিউর রহমান বড়ভূঁইয়া, জৈবসার ব্যবহারের সুফল এবং জৈবিক সার তৈরির কৌশল বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন এছাড়াও স্কুলে এদিন জৈব সার তৈরি করার পদ্ধতি প্র্যাকটিক্যাল দেখনো হয় ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে।
পরিবেশ দূষণের কুফল ও প্রতিকার নিয়ে,পরিবেশ দূষণ থেকে উদ্ভূত সমস্যাগুলোর উপর আলোকপাত করে প্রশিক্ষক তপন আচার্য বলেন, “পরিবেশ দূষণ জনসমাজের জন্য বড় হুমকি। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং আবর্জনা সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করাই পরিবেশ রক্ষার প্রথম ধাপ।” আচার্য পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব এবং সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্লাস্টিক বর্জন নিয়ে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণের কুফল তুলে ধরে প্রশিক্ষক প্রসেনজিৎ শর্মা বলেন, “প্লাস্টিক শুধু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, গৃহপালিত পশুদের জন্যও প্রাণঘাতী, অনেক সময় প্লাস্টিক-ভর্তি আবর্জনা খেয়ে পশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হয়। প্লাস্টিকের ব্যবহার ও পরিবেশ পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও প্রাণী প্রায় বিলুপ্ত। প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করা এবং বিকল্প ব্যবহারই সমস্যার সমাধান।”
বর্জ্য পুনর্ব্যবহার এবং প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করেন তিনি, আবর্জনাগুলো ঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তাও তিনি তুলে ধরেন। এছাড়াও কর্মশালায় প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ফাইভ স্টার ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক আলতাফ হোসেন বড়ভূইয়া।
কর্মশালার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের তৈরি পরিবেশবান্ধব মডেল প্রদর্শনী সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সিলকুড়ি শিক্ষাখণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকা আত্মা দেও শর্মা তিনি পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন এবং এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। পরিবেশ সচেতনতা সমাজ গঠনে এমন উদ্যোগগুলি ভবিষ্যতে আরও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন সিলকুড়ি স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রমা প্রসাদ যাদব, স্কুল পরিচালনা সমিতির সভাপতি বীমা কুর্মি, ডিআরপি বিশ্বজিৎ দেবরায়, সিআরসিসি প্রসেনজিৎ শর্মা, ডিআরপি তপন আচার্জী, রাহুল আলম ও পিংকু সিংহ। নডেল এজেন্সি কোঅর্ডিনেটর আলতাফ হোসেন বড়ভূইয়া, প্রাক্তন আর টিডি সিআরসিসি আব্দুল লতিফ মিয়া, শিলকুড়ি এমই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আত্মা দেও শর্মা আনিস আহমেদ বড়ভূঁইয়া, মতিবুর রহমান বড়ভূইয়া প্রমুখ। তাছাড়া কর্মশালায় লক্ষ্মীপুর শিক্ষাখণ্ডের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা উপস্থিত ছিলেন।