
বরাকবাণী প্রতিবেদনঃশিলচরঃ১৭জানুয়ারিঃ অসম সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ডের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বিভিন্ন প্রকল্প বিতরণের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রাজ্যজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সংখ্যালঘু উন্নয়নের উদ্দেশ্যে চালু হওয়া এই প্রকল্পগুলিতে দুর্নীতি এবং অসঙ্গতির তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, সংখ্যালঘু উন্নয়নের প্রকল্পের জন্য যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের পরিবর্তে হিন্দু ধর্মের কয়েকজন ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, সেলাই মেশিন বিতরণ প্রকল্পের তালিকায় স্বপ্না দাস ও নিভা সিনহা নামে দুজনের নাম রয়েছে, যা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এছাড়াও, কাছাড় জেলায় ই-রিক্সা প্রকল্পে নয়টি রিক্সার জন্য বরাদ্দ থাকলেও মাত্র দুজন তা পেয়েছেন। বাকি সাতটি রিক্সার কোনো সন্ধান নেই।
শিলচর সাব-ডিভিশনের চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন লস্কর এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন যে, তাকে উপেক্ষা করেই এইসব কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। তার মতে, বোর্ড এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা সমন্বয়হীনভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন, যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এই ঘটনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনকারীরা সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন। তবে তালিকা প্রকাশের পর স্পষ্ট হয়েছে যে, প্রকৃত উপকারভোগীদের নাম বাদ পড়ে অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ধরনের অনিয়ম এবং স্বচ্ছতার অভাব সরকারের প্রকল্পগুলির উপর মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। সংখ্যালঘু উন্নয়নের নামে চালু হওয়া প্রকল্পগুলি যদি প্রকৃত উপকারভোগীদের হাতে না পৌঁছায়, তাহলে এই প্রকল্পগুলির কোনো অর্থই থাকে না।
প্রশাসন এবং বোর্ড কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এছাড়াও, ভবিষ্যতে এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণের টাকায় পরিচালিত প্রকল্পগুলির সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।