
শ্রীভূমি প্রতিনিধি, মইনুল হক, ১৪ জানুয়ারি: শ্রীভূমির ফকিরবাজারের এম কে গান্ধী কলেজের অধ্যক্ষ ইকবাল আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর ওপর নির্মম প্রহার, শ্লীলতাহানি এবং জাতিগতভাবে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৪ জানুয়ারি শনিবার পরীক্ষার সময় সুহাদা বেগম নামের ওই ছাত্রীকে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা বদরুল হক বিষয়টি সদর থানায় মামলা করে প্রকাশ্যে আনেন।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, ৪ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে পরীক্ষা শুরুর আগে সুহাদা তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে একটি ভেন গাড়িতে বসে ছিলেন। এ সময় দ্বাদশ শ্রেণির দুই ছাত্র জোরপূর্বক গাড়িতে উঠে বসেন। একজন ছাত্র এই দৃশ্য মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করেন। তবে ভিডিওতে কোনো অশ্লীলতা বা অনৈতিক কাজ দেখা যায়নি।
পরীক্ষার দশ মিনিট পর অধ্যক্ষ ইকবাল আহমেদ চৌধুরী ছাত্রীটিকে ডেকে ভিডিও দেখান এবং তাঁর বক্তব্য না শুনেই নির্মমভাবে মারধর শুরু করেন। অভিযোগে বলা হয়, অধ্যক্ষ তাঁকে কিল, থাপ্পড় এবং লাথি মেরে জাতিগত গালিগালাজ করেন। এমনকি, তিনি বলেন, “এই কলেজে কিরান সম্প্রদায়ের মানুষের পড়ার যোগ্যতা নেই।”
ছাত্রীর পিতা জানান, অধ্যক্ষের ভয়ে প্রথমে তিনি মামলা করতে সাহস পাননি। অধ্যক্ষ নাকি হুমকি দিয়েছিলেন যে, তাঁর মেয়ে এবং কলেজে পড়ুয়া আরও এক মেয়েকে বহিষ্কার করা হবে। তবে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অবশেষে তিনি সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অধ্যক্ষ ইকবাল আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, শারীরিক প্রহার এবং অন্য অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া। মামলার তদন্তে নেমে সদর পুলিশ ইতিমধ্যেই কলেজের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে।
মারধরের কারণে ছাত্রীটির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে সঙ্কটজনক। পিতা বদরুল হকের অভিযোগ, অধ্যক্ষ শুধুমাত্র ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং তিনি অন্য ছাত্রদের দিয়ে ভুক্তভোগী এবং তাঁর পরিবারকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ ছাত্রির পরিবারের।
এই ঘটনা শুধু একজন ছাত্রী ও তার পরিবারের জন্যই নয়, সমগ্র শিক্ষাঙ্গনের জন্য লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়। শিক্ষার পবিত্র পরিবেশে এমন আচরণ শিক্ষক সমাজের নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন মুখে! এ ঘটনা নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিভাবক, শিক্ষার্থী এবং সচেতন নাগরিকরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন।