
ছাত্রছাত্রীদের মেধার ওপর ব্যবসা, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগ কলঙ্কিত !
বরাকবাণী প্রতিবেদনঃশিলচরঃ১৩জানুয়ারিঃ ডক্টর বণিকান্ত কাকতি পুরস্কার প্রকল্পটি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের স্বীকৃতি জানাতে এবং তাদের উৎসাহিত করতে এই প্রকল্পের আওতায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে স্কুটি দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এই মহৎ উদ্যোগটি শ্রীভূমি জেলায় চরম দুর্নীতির শিকার হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, শ্রীভূমি জেলার রয়েল এটিএস শোরুম প্রতিটি স্কুটি দেওয়ার জন্য ৩৫০০ টাকা করে আদায় করছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এই প্রকল্পটি বিনামূল্যে হওয়ার কথা, যেখানে কোনো অর্থ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু বাস্তবে এক্সেসরিজ বা অন্য অজুহাতে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে, যা ছাত্রছাত্রীদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত শনিবার এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে শোরুম প্রাঙ্গণে সরব হয়েছেন ছাত্রছাত্রী সহ অভিবাবকরা। ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং স্থানীয় সমাজকর্মীরা একত্রিত হয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শোরুম কর্তৃপক্ষ প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে বিক্ষোভের চাপে তারা নতুন স্কুটি এনে রাখে এবং দাবি করে, তারা শুধুমাত্র এক্সেসরিজের জন্য অ্যান্ডারটেকিং নিচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, যখন প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, তখন এই অ্যান্ডারটেকিং নেওয়ার যৌক্তিকতা কী? কেন বিষয়টি ছাত্রছাত্রীদের কাছে স্পষ্ট করা হয়নি?
ডক্টর বণিকান্ত কাকতি পুরস্কারের প্রধান কনসাইনি ড. মরতুজা হুসেইন একটি ভিডিও বার্তায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, “এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং এক টাকাও নেওয়া যাবে না।” মুখ্যমন্ত্রীরও একই নির্দেশনা ছিল। তা সত্ত্বেও, শোরুম কর্তৃপক্ষ অ্যান্ডারটেকিং নেওয়ার অজুহাতে অর্থ আদায় করছে। অনেক দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রী এই অতিরিক্ত অর্থের কারণে তাদের প্রাপ্য স্কুটি নিতে পারছে না, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।
ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা এই দুর্নীতির অবসান ও যারা ইতোমধ্যে অর্থ প্রদান করেছেন, তাদের টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এই ধরনের অনিয়ম বন্ধ করা এবং প্রকৃত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। বিনামূল্যে স্কুটি বিতরণ প্রকল্পটি ছাত্রছাত্রীদের মেধাকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি মহৎ প্রচেষ্টা।


এই ঘটনার ফলে অনেক দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রী তাদের প্রাপ্য স্কুটি পেতে অপারগ হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য ছিল ছাত্রছাত্রীদের মেধার স্বীকৃতি ও উৎসাহ প্রদান। দুর্নীতিপরায়ণ কিছু ব্যবসায়ী এই মহৎ উদ্যোগকে কলঙ্কিত করছে, যা গোটা সমাজের জন্য লজ্জাজনক। অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা জোরালো দাবি জানিয়েছেন যে, এই অর্থ আদায় অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং যারা ইতোমধ্যে অর্থ দিয়েছেন, তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতো নেতার উদ্যোগকে সফল করতে প্রশাসনকে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের অভিবাহক মহল। তবে এই বিষয়ে শোরুমের কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগ খন্ডন করে বলেছেন, “কিছু ষড়যন্ত্রকারী আমাদের শোরুমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”