
বরাকবাণী প্রতিবেদনঃকাটিগড়াঃ১৩জানুয়ারিঃ কাটিগড়ার বিহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জলাগ্রামসহ আশপাশের এলাকাগুলিতে একটি মালিকবিহীন ষাঁড় গরুর তাণ্ডব বেশ কিছুদিন ধরেই সাধারণ মানুষের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের নীরবতা এবং বনবিভাগের উদাসীনতার ফলেই এই ঘটনা চরম রূপ ধারণ করেছে। এর করুণ পরিণতি ঘটেছে জলাগ্রামের ৭৬ বছর বয়সী কৃষ্ণকান্ত সিনহার জীবনহানির মাধ্যমে।
গতকাল সকালে নিজের ঘরের উঠানে বসে আগুন পোহানোর সময়, হঠাৎ করে এই ষাঁড়টি তার বাড়িতে প্রবেশ করে কৃষ্ণকান্ত সিনহাকে আক্রমণ করে। আক্রমণের ফলে তিনি বুকের মধ্যে মারাত্মক আঘাত পান। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল এবং সন্তানহীন হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। বৃদ্ধা স্ত্রী স্থানীয় একটি ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে, এবং আঘাতের কারণে তার বুক ফুলে যায়। শেষমেশ, ওই রাতেই কৃষ্ণকান্ত সিনহা মৃত্যুবরণ করেন।
গত বেশ কিছুদিন ধরে এই মালিকবিহীন ষাঁড়টি জলাগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই ষাঁড় গরুটি অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে জখম করেছে। এমনকি, কিছুদিন আগেই এক সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা মেরে গুরুতর আহত করে।
এই ঘটনা শুধু একটি মালিকবিহীন পশুর তাণ্ডব নয়, বরং এটি প্রশাসনের উদাসীনতার একটি চরম উদাহরণ। কেন আগে থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি? কেন বনবিভাগ বা স্থানীয় প্রশাসন গ্রামবাসীর অভিযোগ আমলে নেয়নি? কৃষ্ণকান্তের এই করুণ মৃত্যু প্রশাসনের ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
এলাকার বাসিন্দারা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ষাঁড়ের দৌরাত্ম্য বন্ধ করার জন্য বনবিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। অতিসত্বর এই সমস্যার সমাধান না হলে, আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী তীব্র শোকাহত এবং আতঙ্কিত। তারা অবিলম্বে বনবিভাগের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। এই ষাঁড়টির তাণ্ডব বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।