
বরাকবাণী প্রতিবেদন শিলচর ৮ মেঃ কাছাড় জেলার আইনশৃঙ্খলার চিত্র দিনে দিনে এতটাই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে চুরি, ছিনতাই ও গাড়ি পাচার চক্রের দৌরাত্ম্য এখন আর শহর বা গ্রাম বেছে চলাচল করছে না—প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটে যাচ্ছে নতুন ঘটনা।
এরই মধ্যে সোমবার রাতে বাশকান্দি এলাকায় ছিনতাই হওয়া দুটি মোটরসাইকেলসহ দুই কুখ্যাত গাড়ি পাচার চক্রের পান্ডাকে কাটিগড়ার দীঘরখাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া দুই পাচারকারী হলেন শিলডুবি এলাকার বাসিন্দা বিলাল উদ্দিন লস্কর (৩১) ও মেহবুব আহমেদ লস্কর (৩২)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ বাশকান্দি থেকে ছিনতাই করা হয় দুটি মোটরসাইকেল। ওই দুই বাইকের প্রকৃত মালিক, রাবুল হোসেন লস্কর ও রহিম উদ্দিন লস্কর, তৎক্ষণাৎ বাশকান্দি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সক্রিয় হয় পুলিশ।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সড়ক ছয় নম্বরের দীঘরখালে চলা নিয়মিত নাকা চেকিংয়ে ধরা পড়ে চক্রের দুই সদস্য। পুলিশ তৎপরতায় দুটি বাইক সহ আটক করা হয় পাচারকারীদের। জানা গেছে, ছিনতাই হওয়া বাইক দুটি মেঘালয় হয়ে পাচারের পরিকল্পনা ছিল। তবে পুলিশের সময়োচিত পদক্ষেপে তা বানচাল হয়ে যায়।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠলো, কিছু সংঘবদ্ধ চক্র দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের পরিশ্রমের উপার্জনে কেনা যানবাহনকে টার্গেট করে রাতারাতি পাচারের পরিকল্পনা করছে। ছিনতাইকারীরা শুধু রাস্তায় ছুরি ঠেকিয়ে বাইক নিয়ে নিচ্ছে না, বরং পুরো একটি সিস্টেম গড়ে তুলেছে যারা জেলা থেকে বাইক চুরি করে মেঘালয় বা ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে পাচার করে দিচ্ছে। পুলিশের হাত থেকে একের পর এক অপরাধী ধরা পড়লেও এই চক্রগুলি মূলত পুনরায় সক্রিয় হয়ে পড়ছে, যেটা প্রশাসনের ব্যর্থতাই প্রমাণ করে।
স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, শুধু ছিনতাইকারী ধরা পড়লে হবে না, তাদের পেছনে থাকা বড় মাথাদেরও খুঁজে বের করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরো কড়া নজরদারি, আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে নজরদারি এবং গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে হবে।
ছিনতাই ও চুরি প্রতিরোধে প্রতিটি থানা এলাকায় রাত্রিকালীন টহল জোরদার করার দাবিও উঠেছে। বর্তমানে আটক দুই দুষ্কৃতিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আরও কারা কারা এই চক্রে যুক্ত, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।